প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫০
মহাকালের মহাসমাপ্তি—যেখানে ইতিহাস আর ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার

শীতল পাথরের ওপর মেজারমেন্ট টেপের শব্দ আর বাতাসের দীর্ঘশ্বাস—সব মিলিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানের পরিবেশ আজ ভারী। যে চত্বরে একদা একজন বীরের চিরনিদ্রা নেমে এসেছিল, আজ সেখানেই আরও একটি কবরের জায়গা নির্ধারণ হচ্ছে। এক মহীয়সী নারীর জীবনাবসান-এ যেন একটি বৃত্ত সম্পন্ন হলো। দীর্ঘ ৪৪ বছরের বিচ্ছেদ শেষে একই আঙিনায় চিরস্থায়ী মিলন রচিত হচ্ছে—এক বিষাদময় মহাকাব্য।
|আরো খবর
গৃহবধূ থেকে ‘দেশনেত্রী’—এই যাত্রা ছিল ত্যাগের অগ্নিপরীক্ষা। কোনো বিলাসবহুল পথ নয়, বরং ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময় তাঁকে দাঁড় করিয়েছিল রাজনীতির সম্মুখভাগে। সেই রাতটি হয়ে উঠেছিল জীবন-মোড় ঘোরানো মুহূর্ত, যেখান থেকে শুরু হয় আপসহীন রাজপথের লড়াই। দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতা তাঁকে এনে দেয় গণতন্ত্রের প্রহরী হওয়ার স্বীকৃতি।
ব্যক্তিগত জীবনে ছিল পারিবারিক ট্র্যাজেডির দীর্ঘ ছায়া। শৈশবের পিতৃহানি তাঁকে শিখিয়েছিল সহনশীলতা। জীবনসঙ্গীর বিচ্ছেদ পরিণত হয়েছিল আদর্শ রক্ষার শপথে। আর সন্তান শোক—প্রবাসের দূরত্বে ঘটে যাওয়া—রেখে যায় নীরব হাহাকার, যা কোনো ভাষায় ধরা পড়ে না।
আজ সাদা মার্বেলের মাপজোক-এর দৃশ্যে অনেকের মনে একটাই অনুভব—শেষ আশ্রয়ে প্রত্যাবর্তন। একাকীত্ব, জেল-জুলুম ও অসুস্থতার লড়াই পেরিয়ে এই যাত্রা যেন অমর প্রেমের উপাখ্যান—যেখানে মৃত্যুও ব্যবধান সৃষ্টি করতে পারেনি।
এটি একটি যুগের অবসান। হারানোর মিছিল পেরিয়ে পাওয়া পরম আশ্রয় আজ সম্পূর্ণ হলো। উত্তরাধিকার-এর সামনে পড়ে থাকল নিস্তব্ধতা, আর ইতিহাসে যুক্ত হলো আরেকটি অধ্যায়।
উপসংহার—ইতিহাসের পাতায় দুটি নাম এখন অবিচ্ছেদ্য। পাশাপাশি দুটি কবরের সহাবস্থান আগামী প্রজন্মের কাছে হয়ে থাকবে আপসহীন সংগ্রাম, অদম্য ভালোবাসা এবং ত্যাগের ইতিহাস-এর নীরব সাক্ষী।
লেখক: মো. জাকির হোসেন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা বিএনপি
ডিসিকে/এমজেডএইচ








