প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২২
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ ২ টাকার দাতব্য চিকিৎসালয়

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে অবস্থিত শত বছরের পুরানো ২ টাকার দাতব্য চিকিৎসালয়টি চিকিৎসক ও অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে রয়েছে। এতে আশার আলো হিসেবে থাকা এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নেয়া অসহায় রোগীরা রয়েছেন চরম বিপাকে।
|আরো খবর
রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে চিকিৎসালয়টি বন্ধ থাকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন পৌর প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া।
স্থানীয় পুরাণবাজারের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, পৌরসভার ১ ও ২নং ওয়ার্ডের পুরাণবাজার ও ইব্রাহীমপুরের চরাঞ্চলের কিছু নিম্ন আয়ের মানুষ এই দাতব্য চিকিৎসালয়টিতে সেবা নিতো। এখানে ২ জন আরএমপি চিকিৎসক বা পল্লী চিকিৎসক অর্থাৎ স্বাস্থ্য সহকারী প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিতেন। তারা মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে পেটব্যথা, মাথা ব্যথা, চুলকানি, মা ও শিশুর রোগ নির্ণয়ে পৌরসভা থেকে বরাদ্দকৃত প্যাডে ব্যবস্থাপত্র ও বিনামূল্যে নাপা (প্যারাসিট্যামল), স্যালাইনসহ প্রাথমিক ওষুধপত্র দিতো। কিন্তু গেলো ১৫ দিন পূর্বেই এটি বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান বলেন, ১৯২০ সালে চিকিৎসালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে এক সময় এমবিবিএস ডাক্তার ছিলো। পরে স্বাস্থ্য সহকারীর মাধ্যমে টিকা কেন্দ্রসহ স্বাস্থ্যসেবা বহাল ছিলো। সবশেষ বিপ্লব নামে এখানে থাকা এক স্বাস্থ্য সহকারীকে জন্ম নিবন্ধনের কাজে এবং মোশারফ নামে স্বাস্থ্য সহকারীকে ফিল্ডের কাজে পাঠিয়ে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা এই দাতব্য চিকিৎসালয়টি বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে এখানে আসা হতদরিদ্র রোগীরা চরম বিপাকে রয়েছে।
রহিমা নামে এক বৃদ্ধা বলেন, আমি এখানে চিকিৎসা নিতে এসে দেখি পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এখানে অবস্থান করছে। তারাই জানালো, এটিতে এখন আর চিকিৎসা দেয়া হয় না। আমি গরিব মানুষ। এখানে বিনামূল্যে ওষুধও পেতাম। এখন আমার কী হবে?
এ বিষয়ে পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম নজু বেপারী বলেন, শুনেছি বেশ কিছুদিন যাবৎ এখানে ওষুধ সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়। এরপর খরচ কমাতে এখানকার স্বাস্থ্য সহকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এটি বন্ধ করা হলো আমাদের জানা নেই। আমরা চাই, দাতব্য চিকিৎসালয়টি চালু করে আবার জনস্বার্থে মানুষের সেবা দেয়া হোক।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া বলেন, দাতব্য চিকিৎসালয়টি পৌর অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। মূলত এখানে কোনো চিকিৎসক না থাকায় এটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আশা করছি চিকিৎসক পাওয়া গেলে দ্রুত এটি আবার চালু করা হবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ