বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৪

সক্রিয় অবস্থানে মতলব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি

রেদওয়ান আহমেদ জাকির
সক্রিয় অবস্থানে মতলব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা হলো খেলাধুলা পরিচালনা, ক্রীড়া সম্পর্কিত পরিকল্পনা, আয়োজন, উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করার জন্যে নিবেদিত থাকার প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি স্থানীয় পর্যায়ে খেলাধুলার উন্নয়নের জন্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং তা বাস্তবায়নে কাজ করে। সংস্থাটি খেলাধুলা সম্পর্কিত বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম, যেমন খেলাধুলার গুরুত্ব বিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে।

এটি স্থানীয় পর্যায়ে খেলাধুলার প্রসার ও উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এছাড়াও সংস্থাটি বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা আয়োজন করে এবং খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করে। বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনও ক্রীড়া সংস্থার সাথে কাজ করে। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম মূলত স্থানীয় পর্যায়ে খেলাধুলার উন্নয়নে নিবেদিত।

বাংলাদেশের প্রধান ক্রীড়া সংস্থা হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এটা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে দেশব্যাপী খেলাধুলার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। উপজেলাভিত্তিক ক্রীড়া সংগঠনটি হচ্ছে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। সংস্থাটি স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা আয়োজন করে, যেমন ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল ইত্যাদি। এই প্রতিযোগিতাগুলো সাধারণত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাবগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি স্থানীয় খেলোয়াড়দের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে, যেমন খেলাধুলার সরঞ্জাম সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা ইত্যাদি। এমন বিবেচনায় মতলব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং বর্তমান এডহক কমিটি মোটামুটি সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে।

জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ সালে তৎকালীন মতলব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নকি রিজওয়ানুল হক উপজেলা ক্রীড়া ও সংস্কৃতি কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০ নভেম্বর ১৯৮৬ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলী আশ্রাফ পাটওয়ারী নিস্তার মতলব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন উদ্বোধন করেন। তখন আহ্বায়ক কমিটিতে রুহুল আমিনকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়। পরে মিজানুর রহমান খান, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, মেজবাহ উদ্দিন মেজু ও জহিরুল ইসলাম আলেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা সুলতানা গঠন করেন। তিনি ৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করেন। বর্তমানে এ কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন আহ্বায়ক ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আ.ক.ম. মুহসীন সদস্য হিসেবে রয়েছেন। আর পাঁচ সদস্য হচ্ছেন : ক্রীড়া সম্পৃক্ত ব্যক্তি হিসেবে সাবেক খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মেজু, সাবেক খেলোয়াড় ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. মোজাহিদুল ইসলাম কিরণ, ক্রীড়ানুরাগী ব্যক্তি ও সাবেক খেলোয়াড় মো. মিজানুর রহমান কাজল, ছাত্র প্রতিনিধি মো. ফয়সাল খন্দকার এবং ক্রীড়া সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার সেলিম।

ক্রীড়া সংস্থার এই এডহক কমিটি গঠিত হওয়ার পর পর তারুণ্যের উৎসব-২০২৪, কাবাডি প্রতিযোগিতা, ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া জরাজীর্ণ ভবনটির সংস্কারসহ ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে। ইনডোর ও আউটডোর খেলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় খেলোয়াড় ও একাধিক ক্রীড়ানুরাগী ব্যক্তি বলেন, ক্রীড়া সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম নিয়ে গতিশীল থাকলে মাঠে যুবসমাজসহ ছাত্রদের সমাগম ঘটবে। তখন যুবসমাজ বিপথগামী হবে না। এছাড়াও ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে স্থানীয় আল আমিন ক্রীড়া সংস্থা, কিশোর ব্রাদার্স ক্লাব, ঊষা স্পোর্টিং ক্লাব, আল রশিদ ক্লাবসহ অন্য ক্লাবগুলো কার্যক্রম চলমান রাখতে ও মতলবে খেলোয়াড় তৈরিতে অসামান্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমরা মনে করি। ঝিমিয়ে পড়া ক্রীড়াঙ্গনকে সজাগ করতে ক্রীড়া সংস্থাসহ ক্লাবগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোজাহিদুল ইসলাম কিরণ জানান, এডহক কমিটি তারুণ্যের উৎসবসহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও ক্লাবের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। ভবিষ্যতে ক্রীড়াঙ্গনসহ খেলোয়াড়দের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক মো. আমজাদ হোসেন জানান, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা একেবারেই জরাজীর্ণ ছিলো। সম্প্রতি ক্রীড়া সংস্থায় বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রীড়া সংস্থার বাইরে রং করার পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রীড়া সংস্থার সকল কার্যক্রম শুরু হবে। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী ও তরুণদের নিয়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। শিক্ষার্থীদের মোবাইল ও মাদকমুক্ত করতে ক্রীড়ার সাথে সম্পৃক্ত করার জন্যে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়