বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২১:০৮

চাঁদপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী চূড়ান্ত

চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট
চাঁদপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী চূড়ান্ত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে তৃতীয় ধাপে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার ও প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে এই ৫টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সোমবার (১১ আগস্ট ২০২৫) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেল থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এর আগে কুমিল্লা বিভাগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে অংশ নেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। প্রার্থীদের নির্বাচনী আসনের সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও স্থানীয় পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে প্রতিটি আসনের জন্যে একজন করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। তবে খুব দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচটি আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করার বিষয়ে তিনি বলেন, জোটগতভাবে নির্বাচন করার বিষয়ে অন্যান্য দলের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। পাশাপাশি আমরা এককভাবেও নির্বাচন করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।

চাঁদপুরে ৫টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা হলেন : চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে উজানীর ক্বারী ইব্রাহিম (রহ.)-এর নাতি ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কেন্দ্রীয় সদস্য মুফতি ওমর ফারুক ইব্রাহিমী, চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমেদ সাকী, চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলার সাবেক সভাপতি শেখ মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক আল্লামা মকবুল হোসাইন ও চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহারাস্তি) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী।

চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের প্রার্থী মুফতি ওমর ফারুক কাসেমী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমার পূর্বপুরুষরা (উজানী পীর সাহেব) ইসলাম, দেশ এবং মানুষের খেদমত করার জন্যে কচুয়া এলাকায় এসেছিলেন। তাদের উত্তরসূরি হিসেবে এ এলাকার মানুষের খেদমত করার দায়বোধ আমারও রয়েছে। যেহেতু বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্যে কাজ করতে গেলে বৃহৎ প্লাটফর্মের প্রয়োজন, সেহেতু এই সুযোগটি আমার জন্যে সৌভাগ্যের। আমার সুযোগ হলে আমি ইনসাফ ও ইসলামের কচুয়া প্রতিষ্ঠায় প্রাণপণ চেষ্টা করবো।

চাঁদপুর-২ আসনের (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) প্রার্থী মুফতি মানসুর আহমেদ সাকি বলেন, এই মনোনয়ন আমার জন্যে সম্মানই শুধু নয়, বরং জনগণের সেবা করার এক বিশাল আমানত। ইনশাআল্লাহ আমি সর্বশক্তি দিয়ে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) আসনের জনগণের অধিকার আদায়, উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবা, কৃষি উন্নয়ন এবং মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করবো। এই নির্বাচনে আমি শুধু একটি প্রতীক নয়, বরং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়ে দাঁড়াতে চাই।

চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনের প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, চাঁদপুর-৩ একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী আসন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এই আসনে আশানুরূপ দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। নদী ভাঙ্গন, বেকারত্ব এবং মাদক এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ। আমি নির্বাচিত হলে এই সমস্যাগুলো সমাধানের পাশাপাশি এখানে বেকারত্ব দূরীকরণে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার জন্যে কাজ করবো।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের প্রার্থী আল্লামা মকবুল হোসাইন বলেন, একটি ন্যায়, ইনসাফ এবং আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের জন্যে আমরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছি। চাঁদপুর-৪ আসনকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত, উন্নয়নমুখী একটি এলাকা হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।

চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি) আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, হাজীগঞ্জকে পরিকল্পিত ও উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তোলাই হবে আমার প্রথম কাজ। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল সকল মত ও পথের লোকদের নিয়ে সমন্বিতভাবে হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তির উন্নয়নে কাজ করবো।

এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মাকসুদুর রহমান বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামত, জেলা কমিটির সুপারিশ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে চাঁদপুরের ৫টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। যাদের মনোনীত করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই যোগ্য এবং আদর্শবান ব্যক্তি। প্রত্যেকে স্ব স্ব এলাকায় সমাজ এবং মানবসেবায় নিয়োজিত আছেন। আমরা আশা করছি, যদি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে ৫টি আসনেই আমরা বিজয় লাভ করতে পারবো ইনশাল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়