মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫

যানজট নিরসনে হাজীগঞ্জের মতোই কি হতে যাচ্ছে চাঁদপুর?

অনলাইন ডেস্ক
যানজট নিরসনে হাজীগঞ্জের মতোই কি হতে যাচ্ছে চাঁদপুর?

চাঁদপুর শহরের যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের জরুরি সভা হয়েছে। এ সভায় স্পষ্টত জানিয়ে দেয়া হয়েছে, যানজট নিরসনে কালারভিত্তিক সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইক চলাচল করবে। জরুরি সভাটি রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁদপুরের মানুষ প্রতিনিয়ত যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছে। শহরে বাস, সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনের কারণে চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। অনেকেই ট্রাফিক আইন মানছে না। ২০ বছর আগে এতো যানবাহন ছিলো না, এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ আমাদের পৌরসভার সড়কগুলো এখনো সঙ্কীর্ণ। তাই ট্রাফিক আইন মানতেই হবে।

তিনি বলেন, যানজট নিরসনে আমরা আপাতত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লাল ও সবুজ রংয়ের অটোবাইক চলবে। সিএনজি অটোরিকশা দুটি রংয়ে (হলুদ ও সবুজ) চলাচল করবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এসব নিয়ম কার্যকর থাকবে। রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত উভয় রংয়ের সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইক চলতে পারবে। বিশেষ বিবেচনায় হাসপাতালে রোগী পরিবহনে সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইক শহরে প্রবেশ করতে পারবে। চাঁদপুর পৌরসভার বাইরে জেলায় উভয় রংয়ের সিএনজি অটোরিকশা ও অটোবাইক চলাচল করতে পারবে। তিনি আরও জানান, সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পৌর এলাকায় ট্রাক, লরি ও তেলের ভাউচার প্রবেশ করতে পারবে না। তবে মিনি পিকআপ প্রবেশ করতে পারবে। অন্য জেলার সিএনজি অটোরিকশাগুলো শহরের বাইরে নির্ধারিত স্ট্যান্ডে যাত্রী উঠানামা করাবে। বাস অবশ্যই স্ট্যান্ডের ভেতর থেকে চলতে হবে, কোনোভাবেই রাস্তার সামনে যাত্রী ওঠানামা করা যাবে না। জেলা প্রশাসক বলেন, ২০২৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন নিয়মে অটোবাইক চলাচল শুরু হবে। একদিন লাল অটো চলবে, পরের দিন সবুজ অটো। ভাড়া বৃদ্ধি করলে তাদের চলতে দেয়া হবে না। ১ পয়সাও ভাড়া বাড়ানো যাবে না। আমি লাইসেন্স দেবো স্থানীয় চালককে, মালিককে নয়।

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুর রাকিব, পিপিএম বলেন, যদি কালারভিত্তিক সিএনজি অটোরিকশা চলাচল হয়, তাহলে শহরে আর যানজট থাকবে না। লরি যখন শহরে প্রবেশ করে তখন অন্য কোনো গাড়ি চলতে পারে না। তবে সকাল ৮টার আগে যদি পৌর এলাকা পার হয়ে যায় তাহলে সমস্যা নেই। বাইরের জেলার সিএনজি অটোরিকশা শহরে প্রবেশ করলে আমাদের ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত ব্যবস্থা নিচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়।

একটি জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কঠোর হলে যে কতো বড়ো ভালো কাজ হতে পারে তার বড়ো প্রমাণ হচ্ছে চাঁদপুর জেলার প্রসিদ্ধ হাজীগঞ্জ বাজার। জেলা প্রশাসকের অনড় অবস্থানের কারণে এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অকুণ্ঠ সহযোগিতার কারণে গত ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে হাজীগঞ্জ বাজারের মধ্যবর্তী চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশ থেকে যুগের পর যুগ ধরে অবস্থানকারী হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং হাজীগঞ্জ বাজারের যানজট নিরসন করা সম্ভব হয়েছে। চাঁদপুর শহরের যানজট রোববার জেলা প্রশাসক আহূত জরুরি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যকরের মধ্য দিয়ে নিরসন হবে বলে আমরা আশাবাদী। এজন্যে চাঁদপুর শহরবাসীকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে চাঁদপুর শহরের সকল সড়কের দুপাশ ও ফুটপাত থেকে পৌরসভার মাধ্যমে ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে হকার উচ্ছেদ করতে হবে। অন্যথায় কেবল যানবাহন চলাচলের শৃঙ্খলা দিয়ে যানজট নিরসনের কাজটি টেকসই হবে না। আমরা জেলা প্রশাসকের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত সমূহ জেলা তথ্য অফিসের মাইক দিয়ে ব্যাপক প্রচারের বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করছি। এতে ‘আমরা এসব জানি না’ বা অন্য কোনো অজুহাত দাঁড় করানোর সুযোগ কারো জন্যে থাকবে না বলে মনে করছি। আমরা আশা করছি, হাজীগঞ্জ বাজারকে যানজটমুক্ত করার অসাধ্য সাধনের ন্যায় চাঁদপুর শহরও যানজটমুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়