শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪৫

এ বাড়িটি সম্পর্কে কি কেউ কিছু জানে না?

অনলাইন ডেস্ক
এ বাড়িটি সম্পর্কে কি কেউ কিছু জানে না?

‘পুরাণবাজারের অভিজাত বাড়িতে মাদক ব্যবসা ॥ ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ’ এটি গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদ শিরোনাম। এ সংবাদটিতে লেখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার মেরকাটিজ রোডের অভিজাত বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবত চলে আসছে মাদক ব্যবসাসহ জুয়ার আসর। এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে আশেপাশে বসবাসরত মানুষজন ভয়ে মুখ খোলার সাহস না পাওয়ায় অবৈধ মাদক ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদক ব্যাবসায়ীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ। জানা যায়, ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র পুরাণবাজারের ২নং সরকারি বালক প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মমিন মিয়া বা বেপারী বাড়ি নামে পরিচিত বাড়িটিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী অনেক পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছেন। বসবাসকারীদের কেউ ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী বা শিক্ষকতার মতো মহৎ কাজের সাথে জড়িত থাকায় বাড়িটিতে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে আসছিলো। কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিষাদের কালিমায় ধোঁয়াচ্ছন্ন করে তুলছেন একই বাড়িতে বসবাসরত প্রয়াত খোকন পালের ছেলে চিহ্নিত নেশাখোর মাদক ব্যবসায়ী শ্যামল পাল। সে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় কিছু পাতি নেতার যোগসাজশে তার নিজ বসতঘরকে মাদক বিক্রির নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। বসত ঘরেই চলে তার অবৈধ মাদক ব্যবসার নিরাপদ কার্যক্রম। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এই স্থানেই চলে রাতের অন্ধকারে জুয়ার আসর। বাজি ধরে জুয়া খেলতে গিয়ে অনেক সময় নিজেদের মাঝে দেখা দেয় ঝগড়া-ফ্যাসাদ। শুরু হয় অকথ্য ভাষায় গালাগালি। একটি বাসা বাড়িতে রাতের অন্ধকারে জুয়া খেলাসহ মাদক বিক্রিকে কেন্দ্র করে অজানা, অচেনা যুবকদের অবাধে আসা যাওয়ার কারণে বাড়িতে বসবাসকারীদের মাঝে দেখা দেয় অজানা আশঙ্কা। ভয় সৃষ্টি হয় তাদের সকলের মনে। পরিবেশের ভয়াবহতায় তারা আতংকিত হলেও জীবন ও মানহানির ভয়ে কেউই মুখ খোলার সাহস পান না। জানা যায়, শ্যামল পালের এই ধরনের মাদক ব্যবসার কথা অনেকের জানা থাকলেও অদৃশ্য কারণে কেউই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা ব্যাবস্থা না নেওয়ায় সে দ্বিগুণ উৎসাহে সাহসিকতার সাথে এই ধরনের অসামাজিক অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে নিশ্চিত মনে। তার এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম যদি চলতে থাকে তাহলে বাড়িতে বসবাসরত মানুষদের শান্তি বিঘ্নসহ অনাকাক্সিক্ষত বড়ো ধরনের বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা মনে করেন। পরিবারগুলো শ্যামল পালের অবৈধ কার্যক্রম খতিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে প্রায়শই তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যসহ নানা অপরাধীকে আটক করছে। কিন্তু গোপন সংবাদ প্রদানকারী ‘সোর্সে’র ব্যর্থতা, নিষ্ক্রিয়তা, উদ্দেশ্যমূলক নীরবতা না অন্য কোনো কারণে খোদ চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারের অভিজাত বাড়িটিতে যৌথ অভিযান চলছে নাÑসেটা অনেকেরই প্রশ্ন। আমাদেরও বোধগম্য নয়। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হবার কারণে আপাতত ওই বাড়িতে মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা ও জুয়াড়িরা সতর্ক হয়ে যেতে পারে। তবে সোর্সের লাগাতার নজরদারি থাকলে একসময় ধরা পড়বেই। শুধু পুরাণবাজার নয়, শহর ও গ্রামের অনেক জায়গায় মাদক ও জুয়ার আসর বসছে, যেটা ওপেন সিক্রেট। এসব জায়গায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সোর্স সহ বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ দরকার। এ ব্যাপারে জনগণের সচেতন অংশের সহযোগিতাও অনস্বীকার্য।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়