বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ২২:১০

রূপসায় অসহায় পরিবারের পাশে ইউএনও

নুরুল ইসলাম ফরহাদ।
রূপসায় অসহায় পরিবারের পাশে ইউএনও

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গাব্দেরগাঁও গ্রামের হোসেন গাজী বাড়ির প্রতিবন্ধী মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে যায়। মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকা অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ২০২৫) রাতে যখন বাইরে ভারী বর্ষণ হচ্ছিলো, তখন ঘরের ভেতর তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে শুয়ে ছিলেন লেদা মিয়া। ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার সংকেত কানে বাজে ছোট মেয়েটির। মাকে বলার পরও পাত্তা না পেয়ে বিষয়টি অন্য ভাইবোনদের বলার পর তাদের মা বুঝতে পারে বিষয়টি। দেরি না করে তিনি সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির ভেতরেই বাইরে বের হয়ে যান। তারা বের হওয়ার সাথে সাথে ঘরটি ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে যায়। অল্পের জন্যে বেঁচে যায় ৫টি তাজা প্রাণ। প্রাণ বাঁচলেও জীবন বাঁচাতে হিমশিম খাচ্ছেন লেদা মিয়া। নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তেমন একটা কাজ করতে পারেন না। শারীরিক প্রতিবন্ধিত্বের কারণে অনেকে কাজেও নিতে চান না। তারপরও জীবনের তাগিদে মাঝে মাঝে কাজের খোঁজে বের হয়ে পড়েন। কখনো কাজ পান, আবার কখনো পান না। ১ ছেলে ২ মেয়ের সংসারে এমনিতেই অনটন লেগেই থাকে, তার ওপর ঘরটি গেলো ভেঙ্গে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা।’

লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান, তার স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধিত্বের কারণে কাজ করতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। এর মধ্যে বড়ো মেয়েকে স্কুলেও পড়াচ্ছেন। সবার মুখে খাবার তুলে দিতেই তাকে হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থায় নতুন করে ঘর নির্মাণ করার সাধ্য তার নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামালের ভিডিও (ফরিদগঞ্জ পোস্ট) নিউজের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারি। তাই আমি নিজেই এখানে কিছু উপহার সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসি। হয়তো এটা দিয়ে তার তেমন কিছু হবে না, তবে এলাকার সহৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি ওনার পাশে এসে দাঁড়ান, অন্তত তাদের ঘরটি নির্মাণ হয়ে যাবে। আমরা এটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করতে পারি।

শনিবার (১৯ জুলাই ২০২৫) দুপুরে গাব্দেরগাঁও হোসেন গাজী বাড়িতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তারের হাতে দুই বান্ডেল টিন, নগদ দশ হাজার টাকা এবং কিছু শুকনো খাবার তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ফরহাদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সমাজকর্মী আনোয়ার হোসেন সজিব প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়