মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৫:১১

নিম্নমানের পাথর দিয়ে চলছে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন কাজ!

স্টাফ রিপোর্টার
নিম্নমানের পাথর দিয়ে চলছে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন কাজ!

প্রকল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পৌর প্রশাসক নিজেও নিম্নমানের পাথর সরিয়ে নিয়ে ভালো পাথর দিয়ে ঢালাইর কাজ করার জন্যে বললেও ঠিকাদার তাতে ভ্রূক্ষেপ না করেই নিজের মতো করে কাজ করে চলছেন। ফলে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার। যদিও কিছু ঢালাই শেষে বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্দিষ্ট প্যাকেজে ১ কোটি ৯১ লক্ষ ১৯ হাজার ১শ' ৩৫ টাকায় ৮৫৮৯৯৬ নং ইজিপি টেন্ডারে কাজটি করার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হয় এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনালের সাথে। চুক্তিতে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কের ফরিদগঞ্জ টিএন্ডটির মোড় (ওনুআ চত্বর) থেকে ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট সরকারি হাইস্কুল গেট পর্যন্ত আরসিসি ঢালাইয়ের রাস্তা করার নির্দেশনা রয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল কাজ করার কথা থাকলেও বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে তৎকালীন মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর মেয়ে যেমন মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ নিয়ে নিজেই কাজ করেন, একইভাবে গত এক মাস পূর্বে সাবেক মেয়রের মেয়ের পরিবর্তে আরেক সাবেক মেয়রের বড়ো ভাই মূল ঠিকাদারের সাথে চুক্তি করে একইভাবে নিজেই কাজ শুরু করেন। এর ফলে অতীতে কাজের গুণগত মান যেমন ভালো ছিল না, এখনও তা-ই।

সর্বশেষ ঢালাই কাজের পর স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কালির বাজার চৌরাস্তার কাজ ও এই রাস্তার কাজ চেক করলেই পার্থক্য বোঝা যাবে। সর্বশেষ প্রকল্পের আওতায় উক্ত কাজের সময়ে রেডিমিক্স ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও ব্যবহার করা হয়নি। গত ২৪ জুলাই প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসে প্রকল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার শেরে আলী সিসি ঢালাইয়ে উঁচু-নিচু, কোথাও গর্ত এবং এ কাজে ব্যবহারের জন্যে রাখা নিম্নমানের পাথর দেখতে পেয়ে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সিসি ঢালাইয়ের কাজের সংশোধন ও নিম্নমানের পাথর অপসারণ করে কাজ করার নির্দেশনা দেন।

প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী সোহেল প্রধানিয়া জানান, শেরে আলী স্যার কাজ পরিদর্শন করতে এসে সিসি ঢালাইয়ের মান ঠিক করতে এবং নিম্নমানের পাথর অপসারণ করতে বলেছেন। পাথর অপসারণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সোহেল প্রধানিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে বলেন।

প্রকল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার শেরে আলী জানান, আমি পরিদর্শনে গিয়ে কিছু ম্যাটেরিয়াল খারাপ ছিলো, সেগুলো রিমুভ করতে বলছি। রেডিমিক্স কাছাকাছি না থাকায় রেসিও ঠিক করে দিয়েছি, সে অনুযায়ী কাজ হবে। কিছু পাথর নিম্নমানের বিধায় সেগুলো সরিয়ে নিতে বলেছি। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনিও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে বলেন।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানান, প্রকল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার পাথরগুলো সরিয়ে নিতে বলেছেন। আমাদের কিছু পাথরের কোয়ালিটি তুলনামূলক কম ছিলো। কিন্তু সব পাথর খারাপ না। অপর প্রশ্নে নির্দেশনা অনুযায়ী পাথর সরিয়ে নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিম্নমানের পাথরগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে কিনা তারা বলতে পারবে।

প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার রাকিবুল আলম দিপু জানান, আপনাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা হয়েছে। আমি বলেছি শতভাগ কাজ বুঝে নেয়ার জন্যে। আপনাদের কাজ আপনারা শতভাগ বুঝে নিবেন। মান অনুযায়ী কাজ না হলে কাজ বন্ধ করে দেবেন।

ফরিদগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া জানান, আমি ঠিকাদারকে বলেছি আপনাদের পাথরগুলো মানসম্মত নয়, এ গুলো চেঞ্জ করে কাজ করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়