প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪১
ডাকাতিয়া নদীর ওপর ৩০ বছরের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-চরভৈরবী ও হাইমচর বেরিবাঁধের পাশের অন্তত ৮ গ্রামের মানুষকে ব্যবহার করতে হয় সেতুটি। গ্রামগুলো থেকে উপজেলা সদর কিংবা জেলা সদরে যেতে অপরিহার্য সেতুটির দুই পাশে আছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
উপজেলার ২ নাম্বার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মাঝে ডাকাতিয়া নদীর ওপর এ সেতুটি মালেক খান সেতু হিসেবে পরিচিত।
১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ ফুট প্রস্থের সেতুটি ১৯৯৫ সালে নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। লোহার রড ও কংকর-সিমেন্টের সংমিশ্রণ ৮টি পিলারের ওপর সেতুটি তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ৮টি পিলারেই মরিচা পড়েছে। একটি রেলিং ভেঙ্গে গেছে। সেতুর মাঝামাঝি জায়গায় ২টি গর্ত হয়েছে।
এর মধ্যে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সেতুর আশেপাশের মেঘনার চরাঞ্চলের কৃষক ও গ্রামগুলোর অন্তত ৭ হাজার মানুষকে প্রতিদিন প্রাত্যহিক কাজে পার হতে হয় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে ইজিবাইক, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করে। রিক্সা বা ভ্যানে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হয়। শিশুরা গর্ত দিয়ে নদীতে পড়ে যায় বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, খাসেরহাট, চমকা বাজার, চরবংশী, বটতলা, চান্দারখাল ও চরকাছিয়া, চরইন্দ্রুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ও মেঘনার চরাঞ্চলের প্রায় ৭ হাজার মানুষ ও শিক্ষার্থীরা এই সেতু দিয়েই চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, মোবারকিয়া ও চরবংশী দাখিল মাদরাসা, দুটি কেজি স্কুলে ও খাসেরহাট বাজার এলাকায় যেতে হয়।
চরবংশী গ্রামের বাসিন্দা ভ্যান চালক আবদুল মান্নান (৪৮) বলেন, 'এই সেতু দিয়ে ভ্যান নিয়া আসলে বিপদে পড়তে হয়। যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পরও পেছন থেকে না ঠেললে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না।' একই গ্রামের বাসিন্দা কাশেম ফরাজি (৩৫) বলেন, 'গত ২০ বছর ধরে সেতুর এই অবস্থা। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বার বার গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।'
উত্তর চরবংশী ইউপির প্রশাসক (সহকারী কমিশনার-ভূমি) নিগার সুলতানা বলেন, 'ডাকাতিয়া নদীর উপর এই সেতুর বিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন।'
স্থানীয় সরকার বিভাগকে নতুন করে এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হবে।
রায়পুর এলজিইডি প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, 'ডাকাতিয়া নদীর পুরোনো সেতুর জায়গায় নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা চলছে স্থানীয় সরকার বিভাগে। ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ দশমিক ২ মিটার প্রস্থের সেতুর নকশাও প্রস্তুত করা হচ্ছে।' এলজিইডি ঢাকার প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে।