রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:০৩

চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের দুদিনব্যাপী জন্মোৎসব

বিমল চৌধুরী।।
চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের দুদিনব্যাপী জন্মোৎসব

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৫) চাঁদপুর পুরাণ আদালত পাড়াস্থ অযাচক আশ্রমে মহান সাধক, বিশ্বের কোটি ভক্ত হৃদয়ের প্রাণের স্পন্দন শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের দুদিনব্যাপী শুভ জন্মোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

এ জন্মোৎসবের প্রথমদিন সোমবার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ) শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রমে ভোর ৫টায় হবে প্রেম ধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনি, উলুধ্বনি সহযোগে আরতি ও হরিওঁ কীর্ত্তন। সকাল সাড়ে ৬টায় স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের প্রতিকৃতি নিয়ে হরিওঁ কীর্ত্তনসহ মাঙ্গলিক নগর পরিক্রমা। পরিক্রমাটি পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী দাসপাড়া হতে নিতাইগঞ্জ, ডাইল পট্টি, বাতাসা পট্টি, ফল পট্টি, হরিসভা হয়ে চাঁদপুর পুরাণবাজার (লোহারপুল সংলগ্ন) অখণ্ডমণ্ডলী নির্মল দাসের বাড়িতে গিয়ে শেষ হবে। পরে দুপুর ১২টায় অযাচক আশ্রম প্রাঙ্গণে প্রেম ধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনি ও উলু ধ্বনি সহকারে শ্রী বিগ্রহ ও শ্রী শ্রী বাবা মনির প্রতিচ্ছবি স্থাপন করা হবে। বিকেল ৪টায় চাঁদপুর পুরাণবাজার উদয়ন সঙ্গীত বিদ্যালয় ও অখণ্ড সঙ্গীত সাধক সংগীতশিল্পী মানিক রায়ের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হবে স্বরূপানন্দ সঙ্গীত অনুষ্ঠান। বিকেল ৫টায় অখণ্ড গুরু ভ্রাতা প্রকৌশলী অর্ধেন্দু শেখর দেবনাথের পরিবেশনায় সমবেত উপাসনার স্তোত্রের সরলার্থ আলোচনা হবে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হবে স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের শুভ জন্মোৎসব দিবসের অধিবাস ও বিশেষ সমবেত উপাসনা। রাত পৌনে ৮টায় হবে আমন্ত্রিত অতিথিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে চরিত্রগঠন আন্দোলন বিষয়ক ধর্মীয় আলোচনা সভা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর ২০২৫) ভোর সাড়ে ৫টায় আশ্রমাঙ্গনে হবে প্রেমধ্বনি, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি সহযোগে আরতি কীর্ত্তন। সকাল ৮টায় নবযুগের নবীনদের শ্রী শ্রী অখণ্ড সংহিতা পাঠ শেষে অখণ্ড মণ্ডলেশ্বর স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের শুভ জন্মদিনের বিশেষ সমবেত উপাসনা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর শহরে হরিওঁ কীর্ত্তন সহযোগে নগর পরিক্রমা (সম্প্রীতি র‍্যালি) হবে। দুপুর সাড়ে ১২টায় মহাপ্রসাদ বিতরণ ও হরিওঁ কীর্ত্তন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সন্ধ্যাকালীন কীর্ত্তন ও শ্রী বিগ্রহে অঞ্জলি প্রদান্তে উৎসবের শুভ সমাপ্তি।

দুদিনব্যাপী জন্মোৎসবের অনুষ্ঠানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সকলের আন্তরিক উপস্থিতি ও সহযোগিতা কামনা করেছেন পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের সেবক-সেবিকাবৃন্দ।

জন্মোৎসবের একদিন পর অর্থাৎ ইংরেজি নতুন বছরের প্রথমদিন ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব প্রবর্তিত চরিত্র গঠন আন্দোলন দিবস উদযাপন। এদিন চাঁদপুর জেলা চরিত্র গঠন আন্দোলন পরিষদ, পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম, চাঁদপুর অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের আয়োজনে চরিত্র গঠন আন্দোলনের শুভ সূচনা উপলক্ষে সকাল ৭টায় চাঁদপুর শহরের ঘোড়ামারার মাঠে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ৮টায় অযাচক আশ্রম হতে স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের ভক্ত, অনুরাগী ও সুধীজনদের অংশগ্রহণে র‍্যালি সহকারে চাঁদপুর রেলওয়ে লেকে 'অঙ্গীকার' বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে অযাচক আশ্রম প্রাঙ্গণে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে চরিত্রগঠন আন্দোলন দিবসের আলোচনা সভা।

এসব অনুষ্ঠানে সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন চাঁদপুর জেলা চরিত্র গঠন আন্দোলন পরিষদসহ অখণ্ড সংগঠনের সেবক-সেবিকাবৃন্দ।

উল্লেখ্য, অখণ্ড মণ্ডলেশ্বর শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব পৌষ মাসের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের কোনো একদিন (যার সঠিক দিন, তারিখ, ঠিকুজি, কোষ্ঠী, সময় সকলই অজ্ঞাত) চাঁদপুর শহরের পুরাতন আদালত পাড়ার পুণ্য ভূমিতে পরমারাধ্যা মাতা শ্রী শ্রী মমতা দেবীর গর্ভ হতে অষ্টম মাসে অবতীর্ণ হন। অবতীর্ণ হওয়ার সাত দিন অবচেতন অবস্থায় থাকার পর ৮ দিনের দিন তার মাঝে চেতনা পরিলক্ষিত হয়। তার বাবা ছিলেন আদর্শ সাধক গৃহী পিতা স্বর্গীয় সতীশ চন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় ও ঠাকুর দাদা ছিলেন চাঁদপুরের স্বনামধন্য উকিল

ঋষিতুল্য স্বর্গীয় হরিহর গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রতি বছরই চাঁদপুর অযাচক আশ্রমের পুণ্য জন্মস্থানে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই মহান সাধকের জন্মোৎসব পালন করা হয়। জন্মোৎসবকে কেন্দ্র করে আশ্রম প্রাঙ্গণে দেশ বিদেশের ভক্তদের ব্যাপক আগমন ঘটে। স্বামী স্বরূপানন্দের এই পুণ্য জন্মস্থানের ব্যাপকতা বিবেচনা করে স্বরূপানন্দ ভক্তদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মহান সাধকের পুণ্যজন্মস্থানে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টি নন্দন ধ্যানমন্দির। যার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। অখণ্ড সংগঠনের সেবক-সেবিকাবৃন্দ মনে করেন, বাবা মনির অশেষ কৃপায় তাদের প্রাণের ধ্যান মন্দির নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে দেশ বিদেশের আগত ভক্তদের আরো ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হবে এবং তারা বাবা মনির পুণ্য জন্মস্থান দর্শনে মানসিক শান্তি লাভ করবে। মন্দির নির্মাণে তারা সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়