শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৪

ফরিদগঞ্জে পাঁচশ' অনহারীর মুখে খাবার তুলে দিয়ে বাবার জন্মদিন পালন করলেন পুত্র

শামীম হাসান।।
ফরিদগঞ্জে পাঁচশ' অনহারীর মুখে খাবার তুলে দিয়ে বাবার জন্মদিন পালন করলেন পুত্র

জীবদ্দশায় ছিলেন একজন স্বনামধন্য আদর্শ শিক্ষক। নিরহংকারী-নির্লোভ এ মানুষটি ছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সমরেন্দ্র মিত্র। ৬১ বছরের এক বর্ণাঢ্য জীবন অতিবাহিত করে ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু ২৫ ডিসেম্বর ছিলো মানুষ গড়ার কারিগর সমরেন্দ্র মিত্রের জন্মদিন। বেঁচে থাকতে কেক কাটার মধ্য দিয়ে জন্মদিন পালন করলেও প্রয়াত বাবার জন্মদিনে এ বছর ব্যতিক্রমী আয়োজনে সমরেন্দ্র মিত্র’র জন্মদিন পালন করেন তারই পুত্র তরুণ উদ্যেক্তা সনজিব মিত্র।

বাবার মতোই নিজ উপজেলার মানুষকে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে সনজিব মিত্র বাবার জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর ২০২৫) দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খুঁজে খুঁজে পাঁচশ' অসহায়-অনাহারী মানুষের মাঝে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করেন । এছাড়াও ফরিদগঞ্জের আলোচিত চতুরা গ্রামের আজিম বাড়ির একই পরিবারের ৬ প্রতিবন্ধীর মাঝেও খাবার সামগ্রী বিতরণসহ সাধ্যানুযায়ী নগদ অর্থ প্রদান করেন।

পুরোদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক মো. কামরুজ্জামান, সাংবাদিক গাজী মমিন, সাংবাদিক রিফাত কান্তি সেন, সাংবাদিক শামিম হাসান, আকাশ মিত্র, শুভ মজুমদার, রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

সনজিব মিত্র বলেন, "আমার বাবা একজন প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি শুধু শিক্ষাই বিলাননি, সামাজিক কর্মকাণ্ডও করে গেছেন। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি দেখলে মনে আনন্দ লাগে। বাবা এখন পৃথিবীতে নেই, বাবার জন্যে সবাই প্রার্থনা করবেন।"

সমরেন্দ্র মিত্রের ভাগ্নে সাংবাদিক রিফাত কান্তি সেন বলেন, আমার মামা মানুষকে খাওয়াতে পারলে খুশি হতেন। আমি সাংবাদিকতা পেশার সাথে থাকার সুবাদে উপজেলার অসহায় পরিবারগুলো আমার চেনা। মামা যেহেতু মানুষকে খাওয়াতে পারলে খুশি হতেন, তাঁর খুশির কথা মাথায় রেখেই পরিবারের পক্ষ থেকে এমন আয়োজন। আমরা খাবার দিয়ে কারো ছবি তুলিনি। মানুষের আত্মসম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা প্রকৃত অসহায় মানুষদের বেছে বেছে খাবার বিতরণ করেছি। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্যেই আমাদের আয়োজন।

সমরেন্দ্র মিত্রের ভাতিজা আকাশ মিত্র বলেন, প্রায় পাঁচশ' প্যাকেট খাবার আমরা বিতরণ করেছি। আমার কাকা সামাজিক ভাবেও একজন চমৎকার মানুষ ছিলেন। তিনি নেই পৃথিবীতে, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া ভালো কাজগুলো আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের যারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞচিত্রে ধন্যবাদ।

মৃত্যুকালে সমরেন্দ্র মিত্র স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়