মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৩, ০০:০০

যেসব মৃত্যুতে সান্ত্বনা দেয়া কষ্টকর---
অনলাইন ডেস্ক

কারো বাড়িতে কেউ বেড়াতে এসে যদি দুর্ঘটনায় অপমৃত্যুর শিকার হয়, তাহলে তার পরিবারকে সান্ত¡না দেয়া যে কোনো ব্যক্তির জন্যে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এবার ঈদুল ফিতরের ছুটিতে চাঁদপুরে একের পর এক এমন মৃত্যুতে হরিষে বিষাদে আক্রান্ত হয়েছে অনেকেই, যাদের আছে দরদী মন, অন্যের কষ্টে কাতর হবার প্রবণতা। চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীতে গোসল করতে গিয়ে ডুবে প্রাণ দিয়েছে আদিবুর রহমান নামে ১৬ বছর বয়সী এক মাদরাসা ছাত্র, যে ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বড় ভাইয়ের শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সমবয়সীদের সাথে শখের বশত মেঘনা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে, যার লাশের সন্ধান এখনো মিলেনি। মতলবে ধনাগোদা নদীতে ৭ বছর বয়সী আরেক মাদ্রাসা ছাত্র গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে, যার লাশ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এই শিশুটি ঈদের ছুটিতে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সর্বশেষ নানার বাড়িতে বেড়াতে শেষে প্রাণ দিলো চার বছর বয়সী এক শিশু, যার নাম তাসফিয়া।

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ‘পুরাণবাজারে অটোবাইকের ধাক্কায় প্রাণ গেল শিশুর’ এমন শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে অটোবাইকের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক শিশুর। ১ মে সোমবার বিকেল ৪ টার দিকে নিতাইগঞ্জ সড়কের সাবেক অগ্রণী ব্যাংক শাখার সামনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিশু তাসফিয়া (৪) পুরাণবাজার লোহারপুল শাহী মসজিদের খাদেম ও মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের আল আমিনের মেয়ে।

জানা যায়, শিশু তাসফিয়া মায়ের সাথে মতলব থেকে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো। তার নানা জলিল মিয়ার বাড়ি নিতাইগঞ্জ মুসলিম যুবক সমিতির মসজিদের পিছনে আলম বেকারির পাশে। ঘটনার দিন নানার বাড়ি থেকে তাসফিয়া ছোট মামা ও খালার সাথে রাস্তায় বের হয়। ঘটনাস্থলের চা দোকানদার শাহাদাত জানান, আচমকা দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল তাসফিয়া। তখন বাজার এলাকা হতে একটি অটোবাইক ওইস্থান দিয়ে যাবার সময় গাড়িটির সামনের অংশে প্রচণ্ড ধাক্কা লেগে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় তাসফিয়া। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পাওয়ায় শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বলে চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়। মেয়েটির নানা জলিল মিয়া জানান, সবই আল্লাহর হুকুম, কাকে দোষ দিব। নাতনিকে কবর দেয়ার জন্যে রাতেই মতলবে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাবা আল আমিন ও মা তানজিলাসহ পরিবারের সবাই শোকে আহাজারি করছে।

চলছে গ্রীষ্মকাল। বর্ষা আসন্ন। বর্ষাকালে নিজ বাড়িতে, নানার বাড়িতে কিংবা অন্য কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে কতো শিশু যে পানিতে ডুবে বা অন্যভাবে প্রাণ হারায়, তা পত্রিকার পুরানো ফাইল ঘাঁটলেই খুঁজে পাওয়া যায়। আমরা চাই, এভাবে কোনো মৃত্যুই না ঘটুক। এজন্যে মা-বাবাদের শিশু লালনপালন সংক্রান্ত শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা অর্জন তথা প্যারেন্টিং শিক্ষা সহ কিছু সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। এ বিষয়টিতে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সমূহের ভেবে দেখা দরকার বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়