বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫

বিজয় হোক অগ্রগতির

অনলাইন ডেস্ক
বিজয় হোক অগ্রগতির

রাত বারোটার পর হতেই শুরু হয়ে গেলো ষোলো ডিসেম্বর; আমাদের মহান বিজয় দিবস। আজ হতে চুয়ান্ন বছর আগে এদিনে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস লড়াই করে বিজয় অর্জন করে। এদিন শুধু একটা ভূখণ্ডের বিজয় নয়। বরং এদিন আমরা পূর্ববঙ্গের মানুষ আপন সংস্কৃতি, শিল্প ও অর্থনীতিকে নিজেদের মতো করে এগিয়ে নেওয়ার অধিকার অর্জন করি। খুব সহজে কিন্তু আমাদের এ বিজয় আসেনি। বৃটিশের শাসন হতে মুক্তি পাওয়া পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেওয়া হলো পূর্ববাংলার বাঙালিদের ভবিষ্যৎ। দ্বিজাতিতত্ত্বের কারণে আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে অঁাটিবদ্ধ হলেও উপেক্ষিত হলো আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি, শেকড় ও অধিকার। ধীরে ধীরে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালির দ্রোহের অনবদ্য ও কালজয়ী স্ফূরণ ঘটে। সেই স্ফূরণের শক্তি বাঙালিকে টেনে নিয়ে যায় মহান মুক্তিযুদ্ধ অবধি। একে একে পার হয় বাঙালি সাতটি মহান পর্যায়। ভাষা আন্দোলন, শাসনতন্ত্র আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ।

পঁচিশে মার্চের কালরাত পেরিয়ে বাঙালিকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বিজয় এসে গেলো লাল-সবুজ পতাকায়। আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেলাম, নিজেদের পতাকা পেলাম, আত্মঅধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হলো। কিন্তু সীমাহীন দুর্নীতি, সুশাসনের ঘাটতি ও পরবর্তী প্রজন্মের প্রকৃত দেশপ্রেমের অভাব আমাদের সেই অগ্রগতিকে বেঁধে রাখলো বনসাইয়ের মতো করে। ফলে বিজয়ের চুয়ান্ন বছরের পরেও বিতর্ক আমাদের পিছু ছাড়ছে না। আমরা তিন পা এগিয়ে গেলে চার পা পিছিয়ে যাই আমাদের ঐকমত্যের ঘাটতির জন্যে। মীমাংসিত বিষয়কে আমরা বিতর্কিত করে তুলি অহেতুক পরচর্চায়। পুরনো শত্রুরা দিকে দিকে ফণা তুলছে আবারও। এখন আমাদের বিভেদ নয়, বরং একাঘরে গিন্নি হয়ে ওঠার কথা।

এবারের বিজয় দিবস আমাদের শক্তির উৎস হোক। এখান থেকেই সূচনা হোক অগ্রগতির সোপানের। যারা এ বিজয় অর্জনে অকাতরে জীবন বিলিয়ে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন, তাদের সবাইকে কুর্নিশ জানাই। ‘মহান বিজয় দিবস ২০২৫’ সফল ও সার্থক হোক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়