রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে কচুক্ষেত থেকে কিশোরের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৭

'তার মাথার খুলি এখনো ফ্রিজে!'—চবির সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীর ভয়াবহ পরিণতি

মো. জাকির হোসেন
'তার মাথার খুলি এখনো ফ্রিজে!'—চবির সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীর ভয়াবহ পরিণতি
হাসপাতালের আইসিইউতে ইমতিয়াজ আহমেদ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ছয় দিন পর জীবনের সঙ্গে লড়াইয়ে ফিরলেন অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম। শনিবার বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি হাত-পা নাড়াচ্ছেন, পরিবারের সদস্যদের চিনতে পারছেন।

এদিকে গুরুতর আহত আরেক শিক্ষার্থী সমাজতত্ত্ব বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মামুন মিয়া ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। তবে রামদার কোপে তার মাথার খুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় একাংশ এখনো হাসপাতালের ফ্রিজে সংরক্ষিত আছে।

Screenshot-20250906-224008

হাসপাতালে মামুন মিয়া

পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, সায়েমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। লাইফ সাপোর্ট খোলার পর থেকে তিনি সাড়া দিচ্ছেন। নিউরোসার্জন ও নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। সায়েমের কনশাস লেভেল এতদিন ছিল ৬–এর আশপাশে, যা এখন ১০–এর কাছাকাছি পৌঁছেছে। চিকিৎসকদের মতে, এটি ১০–এর ওপরে গেলে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে।

কুমিল্লার ছেলে সায়েমের পরিবার থাকেন বগুড়ায়। গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ আমিন ছেলের পাশে রয়েছেন। বাবা আমির হোসেন বলেন, “ছেলের প্রাণভিক্ষা চেয়েছি বিধাতার কাছে। আশা করছি, আল্লাহ আমাদের নিরাশ করবেন না।” ভাই আসাদুজ্জামান সজীব জানান, আশার খবর শুনলেও তাদের উৎকণ্ঠা কাটছে না।

অন্যদিকে মামুনের মাথায় গভীর আঘাত লাগায় খুলির একাংশ কেটে বের করতে হয়েছে। সেটি বর্তমানে ফ্রিজে রাখা আছে। তার মাথা সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো এবং সতর্কবার্তা হিসেবে লেখা রয়েছে— ‘হাড় নেই চাপ দেবেন না।’ মামুনের ভাই মাসুদ রানা বলেন, “সে এখন কথা বলতে পারছে, তরল খাবারও দেওয়া হচ্ছে। তবে ডাক্তার বলেছেন, সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগবে এবং ভবিষ্যতে তাকে নানা বিধিনিষেধ মানতে হবে।”

হাসপাতালের স্পেশালাইজড ইউনিটের ইনচার্জ ডা. সিরাজুল মোস্তফা জানান, মামুনের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। দুই থেকে আড়াই মাস পর খুলির অংশ পুনঃস্থাপন করা হতে পারে। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘ সময় লাগবে।

গত ৩০ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় এক ছাত্রীকে ভাড়া বাসায় প্রবেশে বাধা ও দারোয়ানের হাতে হেনস্তার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। পরে তা গ্রামবাসীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ প্রায় ৪০০ জন আহত হন।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়