মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২০:২৮

জুলাইয়ে সড়কে ৪১৮ জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক
জুলাইয়ে সড়কে ৪১৮ জন নিহত

গত জুলাই মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ জন নিহত হয়েছেন। এই মাসে আহত হয়েছেন ৮৫৬ জন।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট ২০২৫) বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, জুলাই মাসে মোট ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ। দুর্ঘটনার সংখ্যা হিসাব করলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনে সংস্থাটি আরও জানায়, নিহতদের মধ্যে নারী ৭২ জন (১৭ দশমিক ২২ শতাংশ) এবং শিশু রয়েছে ৫৩ জন (১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ)। এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯২ জন পথচারী (২২ শতাংশ) এবং বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও সহকারী ৫৬ জন (১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ)। শুধু তাই নয়; চারটি নৌ-দুর্ঘটনায় ৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া ২১টি রেল দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে যানবাহনভিত্তিক দুর্ঘটনার বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে সংস্থাটি। তাতে দেখা যায়, মোটরসাইকেলের পরেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে থ্রি-হুইলার (সিএনজি, অটোরিকশা, অটোভ্যান) দুর্ঘটনায়, যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১০৮ জন (২৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ)। এছাড়া বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন ৪১ জন (৯ দশমিক ৮০ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপে ৩০ জন (৭ দশমিক ১৭ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্সে ২০ জন (৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনে (নসিমন, ভটভটি, পাখিভ্যান, মাহিন্দ্র) ১২ জন (২ দশমিক ৮৭ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশায় ৬ জন (১ দশমিক ৪৪ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।

সংস্থাটি দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণও তুলে ধরেছে প্রতিবেদনে। তাতে দেখা যায়, দুর্ঘটনার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঘটেছে সকালে (২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ)। দুপুরে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, বিকালে ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ, রাতে ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ, সন্ধ্যায় ১১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ভোরে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে তুলে ধরা অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। মোট দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশই ঘটেছে এ বিভাগে। ঢাকা বিভাগেই ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১০৫ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় জুলাই মাসে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৩৮ জন।

এসব সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, অদক্ষ ও অসুস্থ চালক, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের ট্রাফিক আইন না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজির কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশও করেছে সংস্থাটি। সেগুলো হলো—

১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি।

২. চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্টকরণ।

৩. বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি।

৪. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি।

৫. সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ।

৬. গণপরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধ করা।

৭. রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়কপথের চাপ কমানো।

এছাড়া টেকসই পরিবহণ কৌশল প্রণয়ন ও সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮-এর বাধাহীন বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়