প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১৫
ফরিদগঞ্জে পৈত্রিক ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে আদালতে মামলা

ওয়ারিশ সূত্রে নিজেরা জমির মালিক হলেও গত অর্ধশতক ধরে তা অন্যের দখলে। কাগজপত্রের রেকর্ডমূলেও মাত্র নামমাত্র অংশ জমির মালিক। তাই নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তির দখল ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওয়ারিশরা। আদালত সরেজমিন এই ঘটনার তদন্তে সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে দায়িত্ব দেয়ার পর তিনি তা তদন্ত করে এসেছেন। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের হোগলি গ্রামের। যদিও জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে অপর পক্ষের দাবি, ৬০ বছর পূর্বে এওয়াজ বদল সূত্রে তারা একে অপরের ভূমিতে বসবাস করছেন।
|আরো খবর
অভিযোগে প্রকাশ, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬ নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নে হোগলী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মৃত বকুল পাটওয়ারীর পুত্র আবুল কালাম আজাদের পৈত্রিক ও খরিদকৃত ভূমি দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে দখল করে রাখে একই বাড়ির মৃত আব্দুর রশিদের পুত্র মাসুদ আলম গং। এমন অভিযোগ করে আবুল কালাম আজাদ বিজ্ঞ আমলী আদালত, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর-এ ভূমি অধিকার প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের ২০২৩-এ ৭(১/২/৩)ধারায় মামলা (নং- ৬৮০/২০২৫) করেন। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরিদগঞ্জকে আদেশ দেন।
আবুল কালাম আজাদ জানান, ফরিদগঞ্জ বি এস-১৫৯ নং হোগলী মৌজায় বিএস ৫৪৩ নং দাগে ষোল আনায় ৩৪ শতক ভূমি মালিকানার হিস্যাংশ অনুযায়ী বাংলাদেশ জরিপি বিএস রেকর্ডে ১৩ টি খতিয়ানে সকল অংশীদারের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। সে মতে আমার পিতা বকুল মিয়াদের নামে বিএস ৪১০ নং খতিয়ানে বিএস ৫৪৩ নং দাগে ৩ শতক ভূমি রেকর্ডভুক্ত হয় এবং আমি অপর অংশীদারদের থেকে ক্রয় সূত্রে ২ শতক মোট ৫ শতক ভূমির মালিক। অপরদিকে বিবাদীগণের নামে বিএস ৪৪৮ নং খতিয়ানে বিএস-৫৪৩ নং দাগে ১ শতক ভূমি রেকর্ডভুক্ত হয়। ও বিবাদীগণ অপরাপর অংশীদারগণের নিকট হতে ৯ শতক ভূমি খরিদ করেন। উক্ত দাগে বিবাদীগণের মোট ১০ শতক ভূমির বৈধতা থাকলেও বিবাদীগণ উক্ত বিএস-৫৪৩ নং দাগে একই খণ্ডে প্রায় ২৯ শতক ভূমি জোরপূর্বক দখল করে দোকান ও বসতঘর নির্মাণ করে জবর দখলে আছেন। আশা করি আদালত ন্যায় বিচারের মাধ্যমে জবর দখলমুক্ত করবে ও আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পাবো।
মামলার সাক্ষী মো. মহসিন জানান, উক্ত বিএস ৫৪৩ নং দাগে আমিও ৪ শতক ভূমির মালিক। আমার মত বাড়ির অনেকেই মালিক। কিন্তু সকলের যৌথ ভূমি হওয়া সত্ত্বেও মাসুদ আলম গং আমাদের ভূমিও জোরপূর্বক দখল করে আছে। সরেজমিন এই বিষয়ে জানতে গেলে মামলার বিবাদী মাসুদ আলম বলেন, প্রায় ৬০ বছর পূর্বে আমার দাদার আমলে মৌখিকভাবে এওয়াজ বদল করে আমরা বতর্মান স্থানে এবং আবুল কালাম আজাদরা ওই বাড়িতে থাকছেন। দীর্ঘ দিন আমরা এভাবে থাকলেও কারো কোনো সমস্যা হয়নি। ফলে বিএস রেকর্ডও আমাদের নামে হয়নি।
বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি কামরুল পাটওয়ারী জানান, তার বাবার সময়ে মৌখিকভাবে এওয়াজ বদল হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়ে কোনো কাগজপত্র হয়নি। ফরিদগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ আর এম জাহিদ হাসান বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী গত রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) সরেজমিন তদন্ত করেছি। উভয় পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাচাই পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।