রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৬

আসল ভিডিও নাকি আর এআইয়ের বানানো ভিডিও কীভাবে বুঝবেন?

তথ্য প্রযুক্তি কণ্ঠ ডেস্ক
আসল ভিডিও নাকি আর এআইয়ের বানানো ভিডিও কীভাবে বুঝবেন?

আসল ভিডিও আর এআইয়ের বানানো ভিডিও আলাদা করা এখন কঠিন হয়ে উঠেছে। তবে কিছু লক্ষণ যেমন মুখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া, আলো-ছায়ার অসামঞ্জস্য, অডিওর অস্বাভাবিকতা এবং নির্ভরযোগ্য উৎস যাচাই করে বোঝা যায় ভিডিওটি আসল নাকি কৃত্রিম।

ডিজিটাল যুগে ভিডিও আমাদের তথ্য গ্রহণের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ভিডিওর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিশেষ করে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা ডিপফেক ভিডিও এখন এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে যে সাধারণ দর্শকের পক্ষে আসল আর নকল আলাদা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই ফিচারে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো কীভাবে আসল ভিডিও আর এআইয়ের বানানো ভিডিও আলাদা করা যায়, কোন্ কোন্ লক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে এবং কীভাবে প্রযুক্তি ও সচেতনতা আমাদের সাহায্য করতে পারে।

ডিপফেক ভিডিও কী

ডিপফেক হলো এমন ভিডিও, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কারও মুখ, কণ্ঠ বা শরীরকে পরিবর্তন করা হয়। এতে দেখা যায়, কোনো ব্যক্তি এমন কিছু বলছে বা করছে যা বাস্তবে কখনো ঘটেনি। উদাহরণস্বরূপ, কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্যকে বিকৃত করে অন্যভাবে উপস্থাপন করা বা কোনো সেলিব্রেটির ভুয়া ভিডিও বানানো।

কেন ডিপফেক বিপজ্জনক

ভুয়া তথ্য ছড়ানো : রাজনৈতিক বা সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করতে ব্যবহার করা যায়।

ব্যক্তিগত ক্ষতি : কারও সম্মানহানি বা ব্ল্যাকমেইল করার জন্যে ডিপফেক ব্যবহার হতে পারে।

বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট : মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।

আসল আর এআই ভিডিও আলাদা করার উপায়

১. মুখ ও চোখের নড়াচড়া

ডিপফেক ভিডিওতে মুখের নড়াচড়া অনেক সময় অস্বাভাবিক হয়। চোখের পলক ফেলা কম বা বেশি হতে পারে, ঠোঁটের নড়াচড়া কথার সঙ্গে মিল নাও থাকতে পারে।

২. আলো ও ছায়ার অসামঞ্জস্য

আসল ভিডিওতে আলো ও ছায়া স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু এআই ভিডিওতে মুখে আলো পড়ার ধরণ বা ছায়ার অবস্থান অস্বাভাবিক হতে পারে।

৩. অডিওর অস্বাভাবিকতা

ডিপফেক ভিডিওতে কণ্ঠস্বর অনেক সময় যান্ত্রিক শোনায়। শ্বাস নেওয়ার বিরতি থাকে না বা স্বরের ওঠানামা অস্বাভাবিক হয়।

৪. ভিডিওর গুণগত মান

কিছু ক্ষেত্রে ভিডিওর ফ্রেমে ঝাপসা ভাব, পিক্সেল ভাঙা বা অস্বাভাবিক রঙ দেখা যায়।

৫. উৎস যাচাই :

ভিডিও কোথা থেকে এসেছে তা যাচাই করা জরুরি। নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্যম বা অফিসিয়াল সোর্স ছাড়া পাওয়া ভিডিও সন্দেহজনক হতে পারে।

প্রযুক্তিগত সমাধানে

বর্তমানে অনেক টুল তৈরি হয়েছে যা ডিপফেক শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

Deepware

Sensity

TrueMedia.org

DuckDuckGoose

DeepBrain Detector

এই টুলগুলো ভিডিওর প্রতিটি ফ্রেম বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারে ভিডিওটি আসল নাকি এআই দিয়ে বানানো।

সাধারণ মানুষের করণীয়

ভিডিও দেখার আগে উৎস যাচাই করুন।

সন্দেহজনক ভিডিও শেয়ার করবেন না।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও পরীক্ষা করুন।

সচেতনতা বাড়ান এবং অন্যদের সতর্ক করুন।

ডিপফেক ভিডিও প্রযুক্তির এক ভয়ংকর দিক। আসল আর নকল আলাদা করা কঠিন হলেও সচেতনতা, প্রযুক্তি এবং সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সাহায্য করতে পারে। ভবিষ্যতে এআই আরও উন্নত হবে, তাই আমাদেরও আরও সতর্ক হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়