প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ২১:৪১
রামগঞ্জে ডাক্তারের অবহেলা
অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় সাপে কাটা শিশুর মৃত্যু

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন থাকার পরও সাপে কাটা রোগীকে ইনজেকশন না দিয়ে অন্যত্র পাঠানোর ফলে বিষাক্ত সাপের কামড়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. আবদুল আলিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
|আরো খবর
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে রামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ড কলচমা চৌকিদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির মা মহিমা আক্তার জানান, আমার ছোট ছেলে আবদুল আলিম মাদ্রাসা থেকে এসে দুপুর ১২টায় ঘরের দরজায় বসে খেলছিলো। এ সময় হঠাৎ সে চিৎকার দিলে আমরা দৌড়ে আসি। এসে দেখতে পাই, একটি সাপ আমার ছেলেকে কামড় দিয়ে ঘরের সাথের একটি গর্তে ঢুকে পড়েছে। আমি ও আমার জা আবদুল আলিমকে নিয়ে রামগঞ্জ সরকারি হসপিটালে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যাই। হসপিটালের ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ফারজানা ইতি এ সময় জানান, আমাদের হসপিটালে অ্যান্টিভেনম নেই। আপনারা তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে যান। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নেয়ার পথে আমার আদরের সন্তান দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।শিশু আবদুল আলিমের মামা মো. রাছেল শেখ জানান, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হসপিটালে সাপে কাটা রোগীর জন্যে অ্যান্টিভেনম নেই এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, অ্যান্টিভেনমসহ মূল্যবান মেডিসিনগুলো হসপিটাল কর্তৃপক্ষ অন্যত্রে বিক্রি করে দেয়ার কারণে আজ আমার ভাগিনার মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি। এ বিষয়ে ডাক্তার ফারজানা ইতি জানান, ১২টার পর শিশুটিকে হসপিটালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারছেন না তাকে সাপে নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার ব্লাড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শ্বাস প্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে তারা শিশুটিকে অন্যত্রে চিকিৎসা করানোর কথা বললে আমি শিশুর স্বজনদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে রেফার করি। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দিবো না? তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন জানান, এমনতো হওয়ার কথা নয়। আমাদের হসপিটালে সাপে কামড় দেয়া কমপক্ষে চারজন রোগীকে দেয়ার মতো অ্যান্টিভেনম রয়েছে। আমি খবর নিয়ে জানাচ্ছি। এ সময় তিনি আরো জানান, যদি অন্য কোথাও রোগীকে রেফার করতে হয় তাহলে অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার করতে হবে। কিন্তু কী কারণে তিনি (ডাক্তার ফারজানা ইতি) অ্যান্টিভেনম দেননি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।