প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৪
টেস্টের নামে অভিনয়

নাম তার মানিক মিয়া। বয়স চল্লিশ। পেশায় একজন রিকশাচালক।
হঠাৎই পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে শহরের এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান।
বড় নাম, বড় চেম্বার সেই সাথে বিশাল একটি লিস্ট, যেখানে লেখা “আধুনিক টেস্টের মাধ্যমে নির্ভুল চিকিৎসা”।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাহেব কিছু সময় রোগীর কথাগুলো শুনলেন। তারপর বললেন,
“এই ব্যথা সাধারণ নয়। ৫টা টেস্ট করতে হবে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড, রক্তের চারটি প্রোফাইল। টেস্ট না করলে কিছুই বলা যাবে না।”
মানিক মিয়া অক্ষরজ্ঞানহীন হলেও ভদ্র। টেস্টের কাগজ হাতে নিয়ে দৌড়ালেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। টেস্ট করতে গিয়ে খরচ হলো ১০ হাজার টাকা। ঘরে চাল নেই, রিক্সা টাই সম্বল ছিল, সেটাও বিক্রি করে দিলেন।
পরদিন রিপোর্ট নিয়ে গেলেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চোখ বুলিয়ে বললেন,
“সব রিপোর্ট নরমাল। কিছু হয়নি। সামান্য গ্যাস। এই ওষুধগুলো নিন, ভালো হয়ে যাবেন।”
মানিক মিয়ার চোখে জল এসে যায়। হাজার হাজার টাকা খরচ করে তিনি জানলেন, পেটে গ্যাস!
চেম্বার থেকে বেরিয়ে তিনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন সেই চওড়া সাইনবোর্ডটার দিকে
“বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা, আধুনিক প্রযুক্তি”।
ট্রবুকে হাত রাখলেন মানিক মিয়া। ব্যথাটা যেন আরও বেড়ে গেল।
‘বিশেষজ্ঞ’ নামের আড়ালে চলে টেস্টের নামে বাণিজ্য অসুস্থতাকে ব্যবসা বানানোর এক নিষ্ঠুর চাল।
রিক্সাচালক মনের কষ্টে বললেন তুমি কেমন বিশেষজ্ঞ টেস্ট ছাড়া কিছুই বুঝ না।