প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ০০:১৪
কলেজের এইচএসসি শাখা এখানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে : চাঁসক অধ্যক্ষ
সাড়ে পাঁচ বছর ধরে শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসের ভবন পরিত্যক্ত ও কার্যক্রম বন্ধ :ভোগান্তিতে চাঁসক আবাসিক ছাত্ররা

২০২০ সালে করোনাকালীন চাঁদপুর সরকারি কলেজ (চাঁসক)-এর শের-ই বাংলা ছাত্রাবাস যে বন্ধ হয়েছে, এখনও এটি বন্ধ অবস্থায়ই রয়েছে। টানা সাড়ে পাঁচ বছর এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। ভবনটি ব্যবহারেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে এটি ধসে পড়ার অবস্থায়।
শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসটি স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রায় পাঁচ একর জমিতে। ছাত্রাবাসের সামনে একটি বিশাল পুকুর রয়েছে এবং সাথেই রয়েছে একটি মসজিদ। খেলাধুলার জন্যে একটা মাঠও রয়েছে। পুরো এরিয়াটিই পাঁচ একর সম্পত্তির উপর। চারপাশে বাউন্ডারি দেয়াল দ্বারা সুরক্ষিত একটি ছাত্রাবাস। চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এই ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই প্রাণবন্তভাবে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো।
চাঁদপুর সরকারি কলেজের ছাত্রদের জন্যে আবাসিক হল দুটি। একটি শের-ই বাংলা ছাত্রাবাস, অপরটি শহীদ জিয়া ছাত্রাবাস। শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।
আবাসিক ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ছেলেদের জন্যে যে শহীদ জিয়া ছাত্রাবাসটি রয়েছে, সেটিতে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় অনেক আবাসিক ছাত্রকে বাসা ভাড়া করে থাকতে হয়। ভাড়া থাকতে গিয়ে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। অনেক ছাত্রের পক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে থাকা প্রায়ই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে তারা শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মান্নান জানান, আমি দায়িত্বগ্রহণ করেছি ১০ জুলাই, ২০২৪ তারিখে। আর ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ২০২০ সালের মার্চে। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি জানতে পেরেছি, আগের কর্তৃপক্ষ শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসের জন্যে একটি ১০ তলা ভবনের আবেদন করেছিলেন। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, আগের প্রকল্পটির আবেদন বিগত সরকার আমলে নেয়নি।
বর্তমানে আমাদের পরিকল্পনা হলো, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ কিছু বড়ো বড়ো প্রতিষ্ঠান তাদের এইচএসসি শাখাকে যেভাবে পৃথক করেছে, তাদের ন্যায় আমাদের এইচএসসি শাখাটিকে আলাদা করা। যেহেতু শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসটি প্রায় পাঁচ একর জমিতে মূল শহরেই অবস্থিত, তাই সেখানে এইচএসসি শাখাটিকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করার পরিকল্পনার কথা ভাবছি। আমরা সরকারের কাছে শীঘ্রই একটি ছয়তলা ভবনের আবেদন করবো।
শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসের পুকুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুরটি কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। ছাত্রাবাসটিতে যে মসজিদ আছে সে মসজিদের মুসল্লি এবং এলাকার গণ্যমান্য লোকজনসহ পুকুরটিতে মাছ ফেলেছেন এবং মাছ বিক্রি করে মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার করছেন।
মাদকসেবীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দায়িত্বগ্রহণ করার পর আমার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। তাই আমি ছাত্রাবাসটির নিচতলায় কয়েকটি রুম মেরামত করে সেখানে আমাদের কলেজের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর থাকার ব্যবস্থা করতেছি, যাতে কোনো মাদকসেবী সেখানে প্রবেশ করতে না পারে, যতদিন পর্যন্ত আমাদের শের-ই বাংলা ছাত্রাবাসের নতুন ভবনের কাজ না হচ্ছে।