প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:২২
চাঁদপুরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, চরম ভোগান্তিতে দরিদ্র মানুষ

গত তিনদিন যাবত চাঁদপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা কমতে থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
গত ক'দিনের ঘন কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে চাঁদপুরের মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা এই তিন নদীর তীরবর্তী চর এলাকার মানুষ বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন। শীতবস্ত্রের অভাব ও আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় অনেকের জীবন কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে সকাল ও সন্ধ্যায় শীতের প্রকোপ চরম আকার ধারণ করছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিক কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। ফলে নদী, সড়ক-মহাসড়কে নৌযান, যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ঘন কুয়াশার কারণে মেঘনা নদীতে নৌ দুর্ঘটনা বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে তিনিটি নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণহানি ঘটে ক'জনের। হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলছে।
শীতের পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। এই মৌসুমে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠাণ্ডাজনিত সংক্রমণ, অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধ পানির সংকট এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার উল্লেখযোগ্য কারণ।
চাঁদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক শাহ্ মুহাম্মদ শোয়েব বলেন, শুক্রবার (২৬.১২.২০২৫) চাঁদপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২৫.১২.২০২৫) ২০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেজন্যে পরবর্তী ৫ দিনে তাপমাত্রা কমতে পারে।
চাঁদপুর শহর এলাকার রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনের হকার জয়নাল (৫০) জানান, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এ দুদিন শীত বেশি। বাতাসের কারণে দোকানদারি করতে পারছি না। পুরাণবাজার ভূঁইয়ার ঘাটের মাঝি শাহ আলম জানান, ঘন কুয়াশার কারণে নৌকা চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরকারি ও বেসরকারিভাবে কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও চরের অনেক মানুষের কাছে তা এখনও পৌঁছায়নি। তীব্র শীতে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।







