শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৬

ধারাবাহিক উপন্যাস-২৫

নিকুঞ্জ নিকেতন

রাজীব কুমার দাস
নিকুঞ্জ নিকেতন

(পূর্ব প্রকাশের পর)

সকলে একযোগে সহমত প্রকাশ করল। নতুন জায়গায় যাবে এটাতে আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করছিল আমাদের। সকালের নাশতা শেষে কিছু একটা করার জন্য নতুন কাজ হাতে পেয়ে গেছি। প্রায় ঘণ্টাখানের ঘোরাফেরা করে চলে এলাম রুমে। এক এক করে সকলে ফ্রেশ হতে বেশ কিছু সময় লেগে যায়। বীচে হাঁটতে বের হওয়ায় ভোরের ঠান্ডা বাতাসে কেমন যেন অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল তারপরও সকলকে নিয়ে আনন্দে থাকা প্রয়োজন। দুপুরে লাঞ্চের পর আমরা বারান্দায় আড্ডার জন্য বসি। শীতের দুপুরে মিষ্টি রোদ বেশ লাগছে। ভোরের সমুদ্র ভ্রমণটা হুট করে ঠান্ডা লাগার উপক্রম হয়েছিল যদিও তবু আমাদের সচেতনতা থাকলে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা না। রিশিপশনে কল করে ম্যানেজারকে ডাকা হলো। অল্প সময়ের মধ্যে ম্যানেজার এসে উপস্থিত।

‘গুড আফটার নুন স্যার, আমাকে হঠাৎ আসতে বললেন আপনাদের কী কোনো সমস্যা হচ্ছে এখানে!’

‘না ম্যানেজার সাহেব সমস্যা নয় আমরা একটা বিয়য় জানার জন্য আপনাকে নক করেছিলাম তা আপনার কাজের কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি করলাম না তো।’

‘না না স্যার আপনারা আমাদের সম্মানিত ক্লায়েন্ট, আপনাদের জন্য এতটুকু তো করতেই পারি। তা কোন বিষয়ে জানতে চাইছেন একটু বলুন প্লিজ।’

‘আমরা সেন্টমার্টিন যেতে চাইছি আর সেখানে যাওয়া, থাকা, খাওয়া-দাওয়া এই বিষয়ে আপনার একটা গাইডলাইন চাইছি। আপনাদের কোনো ব্যবস্থা আছে! নাকি বাইরে থেকে সবকিছু ব্যবস্থা করতে হবে।’

‘জি না স্যার আমাদের নিজস্ব টুরিজম আছে আপনি চাইলে সেখানে প্যাকেজ নিতে পারেন। একটু অপেক্ষা করুন আমি ট্যুর গাইডটা নিয়ে আসতে বলি। আপনারা গিয়ে চলে আসবেন নাকি থাকবেন সেখানে?’

‘আমরা থাকব এক-দু রাত তারপর চলে আসব।’

আমাদের সাথে কথা বলতে বলতে ম্যানেজার মোবাইলে কল দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের ট্যুরের গাইডটা আনিয়ে নিল এবং তাদের প্যাকেজ সর্ম্পকে বিস্তারিত বলতে লাগল। ম্যানেজারের সাথে কথা বলছে অনিমেষ ও নরেন্দ্র দা। আমরা পাশে বসে শুনছি আর তাদের প্যাকেজগুলো দেখছি। থাকা-খাওয়া এবং আসা যাওয়া নিয়ে বেশ ভালো ব্যবস্থাই এরা করে রেখেছে। পর্যটনে যেন তাদের ক্লায়েন্টদের ঝামেলা না হয় সেজন্য ট্যুর গাইডও করে রেখেছে। টাকা দিয়ে দিলেই বাকিটা ওরা ব্যবস্থা করে দিবে।

‘আপনারা যতদিন থাকবেন সেটা ক্রুজের সাথে সম্পৃক্ত না। আপনাদের থাকার ব্যবস্থাটা এই প্যাকেজেই তবে সেটা আলাদা। ক্রুজের সাথে গেলে আপনাকে ব্রেকফাষ্ট ও লাঞ্চ দেওয়া হবে। ওখানে গিয়ে আমাদের নিদিষ্ট রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ করবেন। যদি একদিনের ট্যুর হয় তাহলে সেখানে পৌঁছার পর আপনারা সময় পাবেন সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা। এই তিন ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে লাঞ্চ ও ঘোরাফেরা করে নিতে হবে। দুপুর তিনটায় জাহাজ চলে আসবে।’

‘আমরা সেখানে থাকতে চাইলে কী ধরনের ব্যবস্থা আছে সেটা বলুন?’

‘আপনারা থাকতে চাইলে সেটা আমাদের আগে বলে দিতে হবে কারণ জাহাজের সাথে আমাদের চুক্তি থাকে যাত্রী নিয়ে যাওয়া-আসা। আসার দিন সন্ধ্যায় একটা হালকা নাশতার আয়োজন করা থাকে ট্যুরিজমের পক্ষ থেকে। এবার আপনি দু-এক দিন থাকলে জাহাজে সেভাবে বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। সেখানে আমাদের ছোট ছোট রিসোর্ট আছে আপনি চাইলে আমাদের মাধ্যমে বুকিং দিতে পারেন আবার আপনি সেখানে গিয়ে পছন্দমতো রিসোর্ট নিতে পারেন। আমাদের ক্যাটালকে বিস্তারিত দেওয়া আছে রুমের ধরন, সুযোগ-সুবিধা কেমন ইত্যাদি সবকিছু দেখে নিতে পারেন স্যার।’

‘বুকিং আপনার মাধ্যমেই দিব আমাদের রুমগুলো গোছানো আর আরামদায়ক হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। সেখানে আমরা দু-রাত্র থাকব তারপর চলে আসব।’

‘তাহলে এই প্যাকেজটা নিতে পারেন স্যার। তা আপনারা কোনদিন যেতে চাইছেন?’

‘আগামীকাল।’

‘এখন পর্যটকদের আগমন বেশি তাই বুকিং পাওয়াটা কষ্টকর। ঠিক আছে স্যার তাহলে আপনাদের জন্য বুকিং দিয়ে দিচ্ছি আপনারা রিসিপশনে এসে পেমেন্ট করে দিবেন।’

‘আমরা কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাব নাকি টেকনাফ হয়ে?’

‘কক্সবাজার থেকে আমাদের ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি স্যার আমরা টেকনাফ থেকে কেয়ারী সিন্দাবাদ অথবা গ্রিন লাইন এই দুটোর যেকোনো একটা জাহাজে নিয়ে যাব। আপনারা কোনটায় যাবেন আর বুকিং কীভাবে নিচ্ছেন সেটাই বলে দিবেন আমায়।’

‘যাব কেয়ারী সিন্দাবাদে আর আপনি ছাদে ব্যবস্থা করবেন। খোলা আকাশের নিচে সমুদ্র ভ্রমণ বেশ লাগবে আপনি সেভাবেই সবকিছু ব্যবস্থা করুন আর একটা কথা কাল আমাদের কখন রওয়ানা দিতে হবে?’

‘জি স্যার, আপনারা ভোর সাড়ে ছয়টায় তৈরি হয়ে চলে আসবেন রিসিপশনে। রাস্তায় আমাদের গাড়ি দাঁড়ান থাকবে এবং পৌঁনে সাতটায় গাড়ি ছেড়ে চলে যাব টেকনাফের উদ্দেশ্যে আর দশটার মধ্যে টেকনাফ থেকে জাহাজ ছেড়ে দিবে। আপনারা সেভাবেই প্রস্তুতি নিন, আমি তাহলে এখন আসি।’

ম্যানেজার লম্বা একটা সালাম ঠুকে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ল। কক্সবাজার ট্যুরে সেন্টমার্টিনটা আমাদের ধ্যান-ধারণায় ছিল না অথচ নরেন্দ্র দা সেটাও যোগ করলেন। ভ্রমণ পিপাসু মানুষগুলো সবসময়ই নতুনত্ব খোঁজে আর সেন্টমার্টিন আমাদের জন্য সেরকমই একটা জায়গা।

‘আজকে কোথায় যাব অনিমেষ?’

‘কোথাও যাব না কারণ কাল ভোরে উঠে রওয়ানা দিতে হবে। জার্নি বেশি হলে অসুস্থ্য হয়ে পড়তে পারি তারচেয়ে আমরা সেখান থেকে ঘুরে এসে না হয় কক্সবাজারে ঘোরাফেরা করব।’

‘কথাটা মন্দ বলনি। আমরা তাহলে আজ এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে কাটিয়ে দেই। তা বিকেল হয়ে আসছে বীচে যাবে নাকি ।’

‘যাব বলছ কেন বলবে চল। তুমি হলে আমাদের মধ্যমণি সারোয়ার তুমি বলবে আর আমরা যাব না তা কী করে হয়।’

‘হা হা হা...’

এখন বিকেল চারটে আর মসজিদে আসরের আজান দিচ্ছে। সারোয়ার ওজু করে নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিল, আমরা সকলে একসাথে নিচে নেমে এসে একটা ভ্রাম্যমাণ চায়ের স্টলের সামনে দাঁড়ালাম। সারোয়ারকে বলা হলো নামাজ শেষে এখানে চলে আসার জন্য। যদিও অভ্যাস নেই তবু লাঞ্চের পর শীতের দুপুরে এককাপ চা মন্দ হয় না। কিছুক্ষণের মধ্যে সারোয়ার নামাজ শেষে আমাদের সাথে এসে যুক্ত হয় আর আমরা একসাথে বীচের দিকে এগোচ্ছি। জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোকে প্রত্যেকে আমরা এক এক করে বর্ণনা করছি আর তাতেই চলছে হাসি-আনন্দ। সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমাদের আর কোনো কাজ নেই। ছোটছোট ছেলে-মেয়েরা হাতে করে কানের দুল, শামুক ও ঝিনুকের তৈরি এটা সেটা নিয়ে আসছে বিক্রির জন্য। তাদের দেখে খুব মায়া লাগে, পকেটে কিছু বাদাম ছিল সবগুলো তাদের বিলিয়ে দেই। একটা মেয়ে সম্ভবত: চার-পাঁচ বছরের হবে, সে তার ভাইয়ের সাথে এসেছে মালা বিক্রির জন্য। বেশ মায়াবী তার মুখটা ঠিক আমার নাতনির মতো। তাকে বাদাম আর একটা চকলেট কিনে দেওয়ায় বেশ খুশি। বাচ্চাটার আনন্দ দেখে মন ভরে গেল। দারিদ্রতার জন্য তাকে এই বয়সেও কষ্ট করা লাগছে আবার অন্যভাবে ভাবলে ওরা শৈশব থেকেই মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাচ্চাগুলোর চেয়ে। তবুও শৈশবে আদর-যত্ন ও ভালোবাসা প্রতিটি শিশুরই অধিকার। ওদের বিদায় দিয়ে আমরা চলে আসি বীচের অস্থায়ী মার্কেটগুলোর দিকে। সারোয়ার এটা সেটা সেখান থেকে কিনছে আর আমরা সকলেই তার সাথে ঘুরছি ভালো কাটছে সময়গুলো এবং সেখানে কী কী পাওয়া যাচ্ছে সেটাও একপ্রকার দেখা হয়ে গেল। মুক্তামালা, রঙিন পাথরের গলার হার, কানের দুল, চুড়ি, শামুক ও ঝিনুকের তৈরি এটা সেটা আরও কত কী। আরেকটু সামনে গিয়ে পাওয়া গেল বার্মিজ আচার, মেয়েদের প্রসাধনী আবার একদিকের কিছু দোকানে মিলছে শুটকি। দেখতে দেখতে আমাদের প্রায় দু ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে যায়। বীচের অস্থায়ী মার্কেটগুলোয় দাম কম তাই আমরা সকলেই কিছু না কিছু কিনে নিলাম নাতি-নাতনিদের জন্য। রাত নয়টার কাছাকাছি আমাদের ডিনার করে নিয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে। ঘুমটা ভালো না হলে সারাদিন অস্বস্তিতে কাটবে, জার্নি করে মজা পাওয়া যাবে না। আজ ডিনারের জন্য আসা হয় পৌষী রেস্তোরাঁয়। শুনেছি ওদের বাংলা খাবারের জন্য বেশ খ্যাতি রয়েছে। ডিনারের ম্যানু দেখে সামুদ্রিক মাছ ওর্ডার করি। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসে গরম ভাত আর বেশ কয়েক পদের ভর্তা-ভাজি। খাবার শুরু করতেই বুঝা যাচ্ছে মান খারাপ না আর এরই মধ্যে চলে আসে মাছের আইটেম। সামুদ্রিক মাছ খেতে বেশ লাগছে আর এগুলোর পুষ্টিমানও বেশি। লোক সমাগম দেখে মনে হয় রেস্টুরেন্টে খ্যাতির জায়গাটা ধরে রেখেছে। এখানে কয়েক বেলা বাইরে খেয়ে বুঝতে পারলাম ভালো রেস্টুরেন্ট না হলে দাম-দর না করে খাওয়াটা হবে বোকামী। তাছাড়া একেক রেস্টুরেন্টের খাবারের মান একেক রকম। বাংলা খাবারের গুনগত মানটা এরা বজায় রেখেছে সেটা খাওয়ার পর বুঝতে পেরেছি। বিল দেওয়ার সময় ম্যানেজারকে অনিমেষ বলে আমরা বাইরে আপনাদের লবিতে বসব কিছুক্ষণ। ম্যানেজার খুব আন্তরিকতার সাথে সম্মতি জানালেন যদিও আমরা ছাড়া ওখানে আর কোনো লোকজন তেমন ছিল না।

‘চল অল্প কিছুক্ষণ বাইরের লবিটায় বসি। খাবার পর একটু বসে আড্ডা দিলে মন্দ হয় না।’

‘আচ্ছা আমরা তো নিজেদের জন্য এই পাঁচ-সাতটা দিন কাটাব। তা জীবনের কখনো কোনো আফসোস যাতে না থাকে সেজন্য তোমাদের কার কী ইচ্ছে আছে বলতে পার। আমরা নিজেরাই নিজেদের ইচ্ছে বা শখগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব।’

‘আপনি কী বলতে চাইছেন নরেন্দ্র দা বুঝতে পারছি না একটু সহজভাবে বলুন তো!’

‘বলছি, এই ধর আমার অনেকগুলো শখ আছে যেমন বাগান করা, বই পড়া, ডায়েরি লেখা আবার একটা বদঅভ্যাস আছে গাছের সাথে কথা বলা।’

‘হা হা হা... আরে বলেন কী দাদা গাছের সাথে কথা বলা! অদ্ভুত তো বিষয়টা।’

‘ঠিক এমনি কিছু অভ্যাস, বদ অভ্যেস থাকলে বলতে পার। অনিমেষ, সারোয়ার, পিটার বল তো দেখি এক এক করে।’

‘আমার একসময় সিগারেটের অভ্যেস ছিল। অসুস্থ্যতার পর ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রায় কিন্তু পুরোপুরি ছাড়া হয়নি।’

‘সিগারেট খেতে ইচ্ছে হচ্ছে এই তো! বেশ তাহলে সিগারেট সাথে নিতে পার তবে অনিমেষ দু-তিনটার বেশি যেন না হয়। এবার পিটার তোমার?’

‘আমার মাঝে মধ্যে ড্রিংক করার অভ্যেস আছে। এই শীতে বিয়ার বা হুইস্কি হলে মন্দ হতো না।’

‘হুম বুঝতে পারছি। ঠিক আছে সামনের থ্রি-স্টার হোটেলটায় বিয়ার বার আছে সেখানে গিয়ে দু পেগ আর অনিমেষের সিগারেটের ইচ্ছেও পূরণ হয়ে যাবে। তোমার কী শখ সারোয়ার?’

‘আমার একটা বিয়ে করতে মন চাইছে।’

‘আরে বল কী এই বয়সে কে তোমাকে মেয়ে দিবে।’

‘সেটাই তো ঝামেলা দাদা। আবার ভাবি যদি বিয়ে করি তাহলে আমার বিবি রাতের বেলায় এসে বেশ জ্বালাবে। বলবে এত বছর আমার সাথে কাটালে আর শেষ বেলায় কেন একটা মেয়ের সর্বনাশ করলে। তুমি তো মরবে কিছুদিনে পরবর্তীতে তার কী হবে।’

‘হা হা হা... তাহলে বিয়ের বিষয়টা পেন্ডিং থাকবে নাকি বাদ দিয়ে দিবে।’

‘ভাবছি, বাঁচব আর কদিন তাই বিয়ের ইচ্ছেটা পেন্ডিং থাক পরে ভেবে দেখব।’

‘হা হা হা... তোমাকে নিয়ে আর পারলাম না। চল তাহলে আমরা বারে যাই।’

নরেন্দ্র দার সম্মতি পেয়ে অনিমেষ এক প্যাকেট সিগারেট কিনে নিল আর আমি বারে বসে দু পেগ হুইস্কি গিলে নিলাম। আজ কত বছর পর হুইস্কির স্বাদ নিচ্ছি। একটা সময় ছিল সপ্তাহে দু একদিন খাওয়া হতো কিন্তু এখন সেটা হয়ে ওঠে না অভাবের তাড়নায়। সারোয়ার আসেনি এখানে তার সাথে সঙ্গ দিচ্ছে নরেন্দ্র দা। অনিমেষ পাশে বসে বেশ সিগারেট টানছে। বারে মাঝ বয়েসি ও তরুনেরা বসে আছে আর তাদের মাঝে আমরা দুজন বৃদ্ধ। হয়তো তাদের এতে অস্বস্তি বোধ হচ্ছে তবু প্রতিদিনতো আমাদের আসা হয় না আজ একটু মানিয়ে নিতে হবে তাদের। বারে মিউজিক সিস্টেমে পঙ্কজ উদাসের গান বাজছে আর গান শুনতে শুনতে দু প্যাগ হুইস্কি বেশ লাগছে এখন। অনিমেষ বলল একটা বোতল নিয়ে নিতে আমি সায় পেয়ে আর দেরি করিনি নিয়ে নিলাম। সেন্টমার্টিনে গেলে কাজে আসবে আবার ভাবি এখানে তো এভাবে অ্যালকোহল পরিবহন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সাবধানে নিয়ে যেতে হবে ওয়াটার বোতলে করে।

‘পিটার, দু পেগই নিয়েছ নাকি ফুল?’

‘না দাদা, আপনি যেমনটা বলেছিলেন সেভাবেই হয়েছে। এতদিন পর বেশি হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি।’

‘তাহলে এবার রুমে যাওয়া যাক।’

[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়