শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯

সন্তোষ দাস মনার কবিতা

অনলাইন ডেস্ক

সন্তোষ দাস মনার কবিতা

যার জন্যে হয়েছিলাম মাটির মতো সহনশীল

কৃত্রিম কিছু মনে রাখতে পারি না

তবে হৃদয়ের রুদ্র দ্বার খুলে দিতে পারি, নিংড়ানো প্রেম তুলে নিতে পারি

কাউকে ভালোবেসে মাটির মতো সহনশীল হতে পারি

আর যা পারি না,

ভুল মানুষগুলোকে মনে রাখতে

কতো মেঘমেদুর সন্ধ্যায় দেখেছি, এলোমেলো মানবীর মুখ!

মানুষের মতো আচরণ দেখেছি হৃদয় শূন্য মানুষের!

অভিমানের প্রাচীর তুলে

একলক্ষ বসন্ত কাটিয়েছি একা একা, প্রজাপতিরা উড়ে গেছে বসন্ত দুয়ারে

নির্লিপ্ত নয়নে দেখেছি সোহাগীদের আনাগোনা!

কোনোদিন কাউকে অভিযোগের পাত্র হাতে তুল দেইনি,

বিছিন্ন দ্বীপে আমার মতো করে আমার ভালোবাসা ঘুরেছে আমার পায়ে পায়ে!

কখনো দেখেছি :

সমুদ্র সফেনের মতো ফুঁসে উঠেছে আমার নতজানু মুখ!

আমায় বিমোহিত করেছিল সেই মেয়েটি, যার জন্যে হয়েছিলাম মাটির মতো সহনশীল।

২৮.১২.২০২২।

আমি তোমার আকাশে

আমি তোমার আকাশে বার বার চক্কর কাটি

আমি তোমার মন মাজারে ঢেউ হই নীরবতা ভেঙ্গে; মলিন অশ্রু হই

চোখের কোণে

আমি তোমার আকাশে বার বার চক্কর কাটি

আমি তোমার ফেলে আসা দিনের স্মৃতি গম্বুজ,

তোমার অব্যক্ত যন্ত্রণা

আমি নিশিরাতে

ঘুমভাঙ্গা স্বপন তোমার

আমি তোমার আকাশে বার বার চক্কর কাটি

আমি তোমার নৈতিকতার প্রেম

সচ্ছল শিশিরে

হলদে-সবুজ বনলতা

আমি তোমার দূরের বসন্ত পাখি

তোমার হৃদয় দহন

আমি তোমার আকাশে বার বার চক্কর কাটি

আমি তোমার বৃষ্টির ধারাপাত, তটিনীর থৈথৈ জল

আমি দাঁড়কাকের ভেজা পালক

আমি তোমার খোঁপায় হই

গুচ্ছ কদম ফুল

আমি তোমার আকাশে নিশি প্রদীপ;

সঙ্গোপনে রূপলি জোছনা

আমি তোমার আকাশে বার বার চক্কর কাটি

আমি সব কষ্ট নষ্ট করে

উজাড় উড়াল মারি তোমার আকাশে।

১১.১০.২০২৫

নীল কুয়াশা

সে ছিলো, সে ফিরে যায়নি

অনভিপ্রেত কুণ্ডলীর শীর্ণ ধুয়া বায়বীয় হয়েছে আমারই কালান্তর অভিশাপে।

কার্তিকের নীল কুয়াশা হেলে পড়েছে, বাদাম গাছের পাতায় -----

সে ফিরে যায়নি, সে ঠায় দাঁড়িয়েছিলো ধূসর প্রান্তরে!

আমি মাঝে মধ্যে বিভ্রান্ত হয়েছি,

পরগাছা দুঃসংবাদে ----

তারা ঢেউয়ের মাঝে সন্নিধান ডিঙ্গি ভাসিয়ে মেঘের কানে বলেছিলো, সে ফিরে গেছে!

সে ফিরে গেছে রাঙ্গা সিঁদুর লাল বেনারসি জড়িয়ে, লোভনীয় বন্ধনে....

যেথায় খুঁজে পাওয়া যায় উচাটন রাত্রির

উষ্ণ অভ্যর্থনা! সাতকাহন আড়ষ্ট চুম্বন!

তারপর,পিপীলিকার বসন্ত ছাউনিতে আমি ছিলাম, শেষ স্তম্ভিত পুরুষ!

আমার আঁধার হয়েছিলো, অন্ধকার ভূমিষ্ঠের মতো,

আমি বায়ান্ন হাজার বছর ছিলাম, পাথর বনে!

একদিন,

সুহৃদ সনসন বাতাস,----

তাহার বিষণ্ন বিধুর মনের খবর দিয়ে যায় আমায়,

আমি বিস্তীর্ণ পথের নেকাব সরিয়ে,

দেখি :

তাহার বিমূর্ত মৌনতা আর কাজল চোখে শতদল অশ্রু!

সে ফিরে যায়নি....

তমসা আঁচলে ঢেকেছিল তাহার প্রেম

নিযুত ফারাকে ফেলতে পারেনি

আমায় সে কোনোদিন ----

আমি তার জন্মান্তরের অনুতাপ, আমি তার নীল কুয়াশা ।। ২০.১১.২০২৫।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়