প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১০
স্বজনদের দাবি, তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে , চিকিৎসকের অবহেলা ছিলো
রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদগঞ্জে হাসপাতাল ভাংচুর

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদগঞ্জের ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি হাসপাতাল ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট ২০২৫) সকালে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ও স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
|আরো খবর
জানা গেছে, পৌর এলাকার কেরোয়া গ্রামের ইসহাক মিয়ার স্ত্রী কহিনুর বেগম (৬৫)কে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট ২০২৫) রাতে অসুস্থ অবস্থায় ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতাললে ভর্তি করায় তার স্বজনরা। শুক্রবার (২২ আগস্ট ২০২৫) সকালে ওই রোগীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এমন অভিযোগ করে রোগীর স্বজন ও কিছু লোকজন হাসপাতালটির বিভিন্ন অংশ ভাংচুর করে। এ সময় হাসপাতালে অবস্থানরত কয়েক শ' লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতাল ভাংচুরের কথা শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন সাবেক পৌর মেয়র মঞ্জিল হোসেনসহ বেশ ক'জন রাজনৈতিক নেতা। তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পুলিশকে সহযোগিতা করেন।
মেয়ের চিকিৎসার জন্যে আসা রামপুরের বিল্লাল হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, সকালে নাস্তার জন্যে হাসপাতালের বাইরে গিয়ে ফিরে আসার পর দেখি, একদল লোক ভাংচুর করছে। আমি আমার রোগীর রুমে ভাংচুর থেকে অনুরোধ করে নিবৃত্ত করি ভাংচুরকারীদের।
মৃত কহিনুর বেগমের রোগীর স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমরা বারংবার ডা. সাদেককে এই রোগী দেখানোর জন্যে বললেও তিনি আসেননি। চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে দেননি। এমনকি এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের ক'জনের গায়ে হাত তোলা হয়।
ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. হুমায়ুন জানান, রোগী ভর্তির পর থেকে তিনি বেশ ক'বার রোগী দেখেছেন। কিডনিজনিত সমস্যার কারণে প্রস্রাব হচ্ছিলো না, রোগীর ব্লাড সুগার লেভেল কম ছিলো। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গ যেগুলো নিয়ে ভর্তি হয়েছে, সেগুলোতো ছিলোই। আমরা ভোরবেলা তাদেরকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলেছিলাম। সকালে ওই রোগী মৃত্যুবরণ করেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো গাফিলতি ছিলো না। উপজেলা পর্যায়ে যতোটুকু চিকিৎসা প্রয়োজন ততোটুকু দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের অন্যতম মালিক ও ডা. সাদেকুর রহমান বলেন, আমি সকালে রোগীর মৃত্যুর কথা ও ভাংচুরের দৃশ্য দেখেছি। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ সঠিক নয়। আমি কেন একজন রোগীকে আটকে রাখবো। আমাদের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলেছিলেন। এই হাসপাতালে রোগীর যতোটুকু প্রয়োজন ততোটুকু চিকিৎসা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজীব চক্রবর্তী জানান, রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাংচুরের কথা জেনে আমরা পুলিশ ফোর্স নিয়ে দ্রুত ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসাপাতাল ও মেডিক্যাল সেন্টারে আসি। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেই। এ সময় সাবেক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এসে আমাদের সহায়তা করেছেন।