বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:২৩

বর্তমান খেলোয়াড়দের সামনে মতলবের ক্রীড়াঙ্গনের সোনালী অতীতকে তুলে ধরতে চাই

------দেওয়ান সুরুজ

রেদওয়ান আহমেদ জাকির
বর্তমান খেলোয়াড়দের সামনে মতলবের ক্রীড়াঙ্গনের সোনালী অতীতকে তুলে ধরতে চাই

মতলবের বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, মতলবের সোনালী অতীতের ফুটবল খেলোয়াড়দের অন্যতম দেওয়ান সুরুজ। তিনি গোলকিপার হিসেবে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। একজন ভালো গোলকিপারও ছিলেন। তিনি প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর যাবৎ তিনি খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি তৎকালীন চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাপ ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন। এখনো মাঠে যান বর্তমান খেলোয়াড়দের উৎসাহ জোগাতে। ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ও তাঁর বিশেষ অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘ক্রীড়াকণ্ঠে’র পক্ষে একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের মতলব ব্যুরো ইনচার্জ রেদওয়ান আহমেদ জাকির। প্রশ্নোত্তর আকারে সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো--

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনার খেলোয়াড়ি জীবন কবে থেকে শুরু? কতােদিন মাঠের খেলায় সক্রিয় ছিলেন বা আছেন?

দেওয়ান সুরুজ : আমার খেলোয়াড়ি জীবনের বর্ণিল অধ্যায় শুরু হয় ১৯৭৯ সাল থেকে। আমার খেলোয়াড়ি জীবনের প্রেরণা আমার বড়োভাই প্রয়াত দেওয়ান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি তৎকালীন স্বনামধন্য ফুটবলার ও ভলিবলার ছিলেন। বাল্যকাল থেকে গোলকিপার হিসেবে খ্যাতি ছিলো আমার। আমার গোলকিপার হওয়ার অনুপ্রেরণা বড়োভাই আলাউদ্দিন ও মৃধা নাছির ভাই। খেলা আমার ধ্যান-জ্ঞান ছিলো। নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের একটি অধ্যায়ে কখন কবে সেরা গোলকিপার ‘দেওয়ান সুরুজ’ হয়ে গেলাম-- খেলার জগৎ আমাকে বুঝতেই দেয়নি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রীড়াঙ্গনে আপনার উল্লখেযোগ্য সাফল্য কী কী?

দেওয়ান সুরুজ : আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে ফুটবলপ্রেমীদের নজরে পড়ি। তখন ছিলো মতলবে ফুটবল অঙ্গনের সোনালী অধ্যায়। দীর্ঘ সতেরো-আঠারো বছর ধরে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মাঠে ছিলাম। ফুটবলের জগৎটাকে তখন দাপিয়ে বেড়িয়েছি, এনজয় করেছি নানান কসরতে। এখন মাঠে যাই বর্তমান প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে, আমাদের মতলবের ক্রীড়াঙ্গনের সোনালী অতীতকে বর্তমান খেলোয়াড়দের সামনে তুলে ধরতে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনার মূল্যায়নে ক্রীড়াঙ্গনে সোনালী অধ্যায় কোন্ সময়টায়?

দেওয়ান সুরুজ : ক্রীড়াঙ্গনে আমার সাফল্য শুরু হয় ফুটবল দিয়ে। তখন ফুটবলে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার গৌরব আমার ঝুলিতেই ছিলো। ঢাকায় বিভিন্ন ক্লাবে খেলার সুযোগ আমার হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় বিভাগে খেলেছি অগ্রণী ব্যাংক ক্লাবে। তৃতীয় বিভাগে খেলেছি বিজি প্রেসে। তখন প্রয়াত মোহাম্মদ আলী ভাইয়ের উৎসাহে ঢাকা কলেজে প্রাণিবিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হয়ে খেলাধুলা করতাম। ফজর নামাজের পর এবং বিকেলে কলাবাগান মাঠের দামাল দিনগুলো এখনো যৌবনের প্রদীপ্ত সময়ে তাড়িয়ে বেড়ায়। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নকালীন আমার সবচেয়ে বড়ো সাফল্য ব্যাডমিন্টন খেলায়। জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অধীনে ব্যাডমিন্টন খেলা ছিলো আমার জীবনের বিস্ময়কর অধ্যায়। আমার জীবনের স্মরণীয় অধ্যায় চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাপ ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করা।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনি খেলাধুলার পাশাপাশি রাজনীতি কি করেন? না মনোযোগী ব্যবসায়ী? এক্ষেত্রে সফলতা কেমন?

দেওয়ান সুরুজ : রাজনীতিতে ১৯৯১ সালে মতলব শহর শাখা যুবদলের আহ্বায়ক ছিলাম। পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। রাজনীতি করতে গিয়ে ১৯৯৬ সালে কারারুদ্ধ থেকেছি ৩৭দিন। প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবে ব্যবসা করে আসছি দীর্ঘ সময় ধরে। আল্লাহর কাছে শোকরিয়া, আল্লাহ আমাদের ভালো রেখেছেন। মানুষকে ভাল থাকার জন্যে পরিশ্রম করতে হয়, সেটা আমি ধ্যানে-জ্ঞানে করি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : উপরােল্লখিতি প্রশ্ন সমূহের বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে বলতে পারেন (বিশেষ করে মতলবে ক্রীড়ার উন্নয়নে পরার্মশ সহ অন্য কিছু)

দেওয়ান সুরুজ : আমি মতলব ডিগ্রি কলেজ সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলাম। মতলব দক্ষিণ ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি ছিলাম। মতলব ক্রীড়া সংস্থার ক্রমান্বয়ে সদস্য ছিলাম। আমার পর্যবেক্ষণে মাঝখানে ঝিমিয়ে পড়া ক্রীড়াজগৎ এখন কিছুটা উজ্জীবিত। এ বিষয়ে সাবেক ও বর্তমান খেলাপ্রেমী যারা সহযোগিতা করছেন, তাদরে প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বর্তমান প্রশাসনকে ক্রীড়া জগতের প্রতি আরো গতিশীল হতে অনুরোধ করছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনার জন্ম, জন্মস্থান, পিতা-মাতা, জীবন সংগ্রাম ও পরিবার সম্পর্কে কিছু বলুন।

দেওয়ান সুরুজ : ১৯৬৭ সালে কলাদি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। আমার পিতা মরহুম আব্দুল জলিল দেওয়ান মতলবের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মাতা মরহুমা ফুলমতি বেগম একজন গৃহিণী ছিলেন। আমি দুই সন্তানের জনক। আমার বড়ো ছেলে দেওয়ান জাহিদুল ইসলাম চাকুরিজীবী ও ছোট ছেলে দেওয়ান সাহেদুল ইসলাম আইন বিভাগে অধ্যয়নরত। আমার স্ত্রী আইনুন্নাহার কাদরী, অধ্যাপিকা, বাংলা বিভাগ, মতলব সরকারি কলেজ। আমার পরিবার, আমার শান্তি-সমৃদ্ধির জন্যে মহান আল্লাহতায়লার কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। আল্লাহ আমাদের যে সম্মান দিয়েছেন, তার মর্যাদা যেন আমার পরিবার রাখতে পারে। সেজন্যে সকলের নিকট দোয়া কামনা করছি। আমিন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়