বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ০০:২০

চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাসের চাপ কম!

ভোগান্তিতে হাজারো পরিবার

মো. আবদুর রহমান গাজী
চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাসের চাপ কম!

চাঁদপুর, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে সম্প্রতি গ্যাসের চাপ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে চাঁদপুর শহরের জিটি রোড উত্তর, বিষ্ণুদীসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্যাস একেবারেই থাকছে না। এতে বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

জানা যায়, এই অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ হয় মূলত সাগর থেকে আনা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG)-এর মাধ্যমে। তবে সরবরাহ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় গ্যাসের চাপ প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে রান্নার সময় সকাল ৬টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ একেবারে থাকছে না বললেই চলে।

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার, কালীবাড়ি, বাবুরহাট, ঘোষপাড়া, চৌধুরীঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গ্যাস-সংকট এখন নিয়মিত ঘটনা। গৃহিণীরা সকালে রান্না করতে না পেরে কাঠ, কয়লার চুলো বা ইলেকট্রিক হিটার ব্যবহার করছেন, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। হোটেল ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা রোজিনা আক্তার বলেন, প্রতিদিন সকালে গ্যাস থাকে না। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে রান্না করতে পারি না। বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে হোটেল থেকে খাবার আনতে হয়।

এদিকে বিতরণকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ কম থাকায় এলএনজি নির্ভর অঞ্চলগুলোতে চাপ পড়ে গেছে। ফলে এলাকাভেদে গ্যাস বিতরণ সীমিত করা হচ্ছে।

নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকাতেও একই রকম পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চট্টগ্রামের হালিশহর, খুলশী ও আগ্রাবাদে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তারা বারবার অভিযোগ করলেও তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান মিলছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের গ্যাস চাহিদা প্রতিদিন বাড়লেও নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান ও সংরক্ষণ প্রকল্পে তেমন অগ্রগতি নেই। LNG আমদানি করেও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

চাঁদপুর গ্যাস অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে গ্যাস পাই, যা জাতীয়ভাবে কম সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কারণে নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে চাপ কমে যায়। এই সংকটের কোনো স্থায়ী সমাধান আমাদের এখান থেকে দেয়া সম্ভব নয়।

ভুক্তভোগীরা দ্রুত সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

চাঁদপুর শহরের জিটি রোড উত্তর বিষ্ণুদী এলাকার ১৭৬ জন গ্রাহক চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সমস্যার সমাধান পায়নি। অথচ প্রতি মাসে গ্যাস বিল পরিশোধ করে যাচ্ছেন।

চাঁদপুর জেলায় বাখরাবাদ গ্যাস এরিয়া ম্যানেজার (সেলস্) প্রকৌশলী মো. ফজলে রাব্বী জানান, বর্তমানে বৃষ্টির কারণে গ্যাসের চাপ কম। এ রকম আরো কয়েকদিন চলবে। তবে এই অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ হয় মূলত সাগর দিয়ে আনা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG)-এর মাধ্যমে। তবে সরবরাহ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় গ্যাসের চাপ প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে। আবাসিক গ্যাস সমস্যা কবে সমাধান হবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতনরাই জানেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়