প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ১২:৫৫
পরিবারে শোকের মাতম
ফরিদগঞ্জে মাদক কারবারিদের ছুরিকাঘাতে আহত মোস্তফার মৃত্যু

ফরিদগঞ্জে মাদক কারবারিদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত মো. মোস্তফা (২৭) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহত মোস্তফা পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শাশিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত দিদার হোসেনের ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক ছিলেন।
|আরো খবর
নিহতের পরিবার জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় মোস্তফাকে প্রথমে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
বুধবার (১৮ জুন ২০২৫) দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ১২ জুন ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) রাতে স্থানীয় মাদক কারবারি সোহেল গং মোস্তফাকে নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মারধর এবং পিঠে ছুরিকাঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সোহেল ও নিহত মোস্তফা একই গ্রামের বাসিন্দা। সোহেলের ভাই ফয়সাল এক দোকানির কাছ থেকে পেট্রোল আনার কথা বলে ৪ হাজার ৬০০ টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। দোকানদার জাহাঙ্গীর মোস্তফার আত্মীয় হওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে সোহেল গংয়ের সঙ্গে কথা বলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোস্তফাকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হামলা চালানো হয়।
নিহতের ভাই মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমার ভাইকে রাত ১০টার দিকে ঘর থেকে ডেকে পিটানো হয় ও ছুরিকাঘাত করা হয় । খবর পেয়ে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই।
নিহত মোস্তফার স্ত্রী সুমী বেগম জানান, স্বামীকে হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছি। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাবো। আমি আমার স্বামী হত্যার সাথে জড়িত সকলের বিচার দাবি করছি। একই সাথে ১২ তারিখের ঘটনায় কেন ৪ দিন পর মামলা হলো তা নিয়েও আমার প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া আসামীরা কীভাবে এতো দ্রুত জামিন পেলো তাও প্রশ্ন।
স্থানীয়রা জানান, সোহেল গং এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারি। একাধিকবার তারা মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, মোস্তফা তাদের মাদক কারবারে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
অপরদিকে এ ঘটনায় মোস্তফার ভাই আলাউদ্দিন গত ১৬ জুন ৪ জনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহার নামীয় সবাই একই পরিবারের সদস্য।
পুলিশ ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত পিতা-পুত্রসহ তিনজনকে ঢাকার তেজগাঁও এলাকা ও ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। তাদের মধ্যে পিতা আবুল হোসেন ও ছেলে রুবেল জামিনে বের হয়ে আসলেও অপর ছেলে ফয়সাল এখনও জেল হাজতে রয়েছে। তবে মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী সোহেল এখনও পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মাদক মামলাও রয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই নুরুল আলম বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মোস্তফা মারা গেছে। সেখানেই তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধান আসামী সোহেলকে গ্রেফতারের জন্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মাদক মামলা রয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, এ ঘটনায় এজাহার নামীয় সবাই একই পরিবারের সদস্য, ইতোমধ্যে পিতা-পুত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের জন্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।