বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ১২:২২

চাঁদপুর কণ্ঠে একদশকে আমার যাত্রা

আবদুর রাজ্জাক
চাঁদপুর কণ্ঠে একদশকে আমার যাত্রা

প্রতিটি শব্দেরও একটি জন্ম হয়, ঠিক যেমন জন্ম হয় মানুষের। আর কিছু কিছু কাগজ থাকেÑযারা সেই শব্দদের জন্ম দিতে জানে, বড় করে তুলতে জানে ভালোবাসার বাতাসে, পাঠকের চোখের জলে। ‘চঁাদপুর কণ্ঠ’Ñএমনই এক কাগজ, যেখানে আমি খুঁজে পেয়েছি নিজের লেখকসত্তার প্রথম হাতেখড়ি, প্রথম সাহস, প্রথম চিহ্ন।

এই পত্রিকাটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দঁাড়িয়ে আমি আজ নিজেকে ফিরে দেখিÑএক দশকেরও বেশি সময় ধরে এ কাগজের পাঠক ফোরাম ও সাহিত্য পাতায় আমি লিখে গেছি আমার মনের কথা। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ফিচারÑকোন ধারা বাদ যায়? একটি মাত্র জায়গাÑযা আমাকে কখনো ফিরিয়ে দেয়নি, বরং হাত বাড়িয়ে বলেছেÑ‘এসো, লিখো, বলে যাও নিজের কথা।’

আমার লেখা যখন প্রথমবার ছাপা হলো চঁাদপুর কণ্ঠে, আমার ছোট্ট কাব্যের ভিতর দিয়ে যখন পত্রিকাটি পাঠকের কাছে আমার নাম পেঁৗছে দিল, তখন মনে হয়েছিলÑআমিও পারি। আমারও কিছু বলার আছে। সেই দিন আজো চোখে ভাসেÑপ্রথম প্রকাশ, প্রথম পাঠকপ্রতিক্রিয়া, প্রথম সেই আনন্দময় স্পর্শ।

আর এই আনন্দ, এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে যিনি নিরব সাহচর্যে থেকেছেনÑতিনি চঁাদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামের বিভাগীয় সম্পাদক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান ভাই। তঁার স্নেহপরায়ণ চোখ, শিল্পবোধ ও অবারিত হৃদয়ই আমাকে শিখিয়েছেÑএকটি শব্দ কেমন করে বাক্যে দঁাড়ায়, একটি বাক্য কেমন করে পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তিনি কেবল একজন সম্পাদক ননÑআমাদের মতো নবীন লেখকদের আত্মিক অভিভাবক।

সাহিত্য পাতার প্রতি তঁার মমতা, নিষ্ঠা ও পাঠকের প্রতি দায়িত্ববোধই আজ চঁাদপুর কণ্ঠকে করেছে দক্ষিণবঙ্গের সাহিত্য প্রেমিকদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কাগজ। তঁার কল্যাণেই চঁাদপুর কণ্ঠ শুধু সংবাদপত্র হয়ে থাকেনি, হয়ে উঠেছে সাহিত্যের বাতিঘর।

তেমনি, কৃতজ্ঞতা জানাই পত্রিকার শ্রদ্ধেয় সম্পাদক কাজী শাহাদাত স্যারের প্রতিও, যঁার নেতৃত্বে এই কাগজ দীর্ঘ সময় ধরে সময়ের মুখোমুখি দঁাড়িয়ে থেকেছে দৃপ্ত কণ্ঠে। তঁার আপসহীন মানসিকতা, পত্রিকার গুণগত মান রক্ষায় অতুলনীয় দায়বোধ এবং সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতাই আজ এই পত্রিকাটিকে দিয়েছে অসংখ্য পাঠকের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

এই দীর্ঘ যাত্রায় আমি পেয়েছি পুরস্কার, সম্মাননাও। কিন্তু তার চেয়ে বড় প্রাপ্তি হলোÑপত্রিকার পাতায় নিজের একটি চিহ্ন রেখে যাওয়ার আনন্দ। একজন লেখক যখন দেখে তার সৃষ্টি মানুষের মনে রেখাপাত করেছেÑতখন তার হৃদয়েও জন্ম নেয় অনন্ত কৃতজ্ঞতার ধ্বনি।

আজ চঁাদপুর কণ্ঠের এই ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি সশ্রদ্ধ কণ্ঠে বলিÑতোমার পাতায় আমি শুধু লেখা দিইনি, তোমার পাতায় আমি নিজেকে খুঁজেছি। তুমি আমার সৃষ্টির প্রথম পাঠশালা, প্রথম আত্মপ্রকাশের মঞ্চ।

তোমাকে জানাই হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর আশীর্বাদ। তুমি থেকো আরও শত শত বছর ধরে সাহসী কণ্ঠস্বর হয়ে, থেকো সময়ের নান্দনিক সাক্ষ্য হয়ে, থেকো শব্দে ও চিন্তায় আমাদের জাগরণের দীপ্ত বাতিঘর হয়ে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়