প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ০০:৫৫
ধর্ষণ মামলায় আটক গায়ক নোবেলের সঙ্গে বাদীর কারাগারে বিয়ের নির্দেশ
উভয়পক্ষের সম্মতিতে আদালতের নির্দেশনা, কারা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে

গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল ও ইডেন মহিলা কলেজের এক সাবেক শিক্ষার্থীর মধ্যকার আলোচিত ধর্ষণ মামলাটি নতুন মোড় নিয়েছে। মামলার বাদী ও আসামি উভয়ের সম্মতিতে কারাগারে বিয়ে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত।
|আরো খবর
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীর করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারাগারে বিবাহ কার্য সম্পাদনের নির্দেশ দেন বিচারক। আবেদনে জানানো হয়, গত ২০ মে থেকে নোবেল কারাগারে আটক রয়েছেন। বাদী ও আসামির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে মামলাটি দায়ের করা হয় এবং তারা পরস্পরকে বিয়ে করতে সম্মত হয়েছেন।
আদালত শুনানি শেষে আবেদনে সম্মতি জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর রাজধানীর একটি স্টুডিও দেখানোর কথা বলে নোবেল ওই শিক্ষার্থীকে তার বাসায় নিয়ে যান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী, সেদিন নোবেল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
২০২৫ সালের ১৯ মে রাত ২টার দিকে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে গায়ক নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ধর্ষণ মামলার ভিত্তিতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখে তাকে শনাক্ত করে এবং পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে।
এই মামলার খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। কেউ এটিকে ‘ধর্ষণের বৈধতা’ দাবি করে সমালোচনা করছেন, কেউ বলছেন, “সমঝোতার মাধ্যমে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করা অন্যায় নয়।”
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব কবির চৌধুরী বলেন, “বিয়ে হলেও মামলাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয় না। আদালতের পর্যবেক্ষণ এবং বাদীর জবানবন্দিই এখানে মুখ্য।”
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশনায় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, কারাগারে বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য কাবিননামা রেজিস্ট্রেশন, অভিভাবক উপস্থিতি ও সাক্ষী থাকা বাধ্যতামূলক।
আইন অনুযায়ী, ধর্ষণ একটি অপরাধ হলেও যদি বাদী পরবর্তীতে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে চান, তবে বিচারক নিজ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
এই বিয়ে ও মামলার পরিণতি ভবিষ্যতে ধর্ষণ মামলার প্রেক্ষাপটে একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে — বিশেষ করে যেখানে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, ভুল বোঝাবুঝি ও সামাজিক চাপ জড়িয়ে থাকে।
???? “বিয়ে হয়ে গেলেই অপরাধ মুছে যায় না। তবে বাদী যদি ইচ্ছায় মামলা প্রত্যাহার করেন, সেটি বিচারকের বিবেচ্য বিষয়।”– ব্যারিস্টার রাহাত হোসেন, আইন বিশ্লেষক
ডিসিকে/এমজেডএইচ