প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩০
নিভৃতহারা
মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম নিভৃতহারা
স্বপ্ন ছিল এক প্রকার দিব্যলোক,
যেখানে নিজস্বতা ছিলো ছায়ার মতÑ
চুপচাপ, কিন্তু আমার, নিভৃত।
তখন হৃদয়ের ঘূর্ণিতে জন্মাত জোৎস্না,
প্রতিটি একাকীত্ব ছিলো আত্মগত
উৎসব, নেশা ও বটে।
আমি ছিলাম এক জোড়া খালি চোখ,
যা ভবিষ্যতের আলো খুঁজতো,
যেখানে প্রতিটি প্রতিশ্রুতি ছিল
আকাশে ভাসমান কুয়াশার প্রান্তে
লেখা আশ্বাস।
তারপর একদিনÑ
একটি সামাজিক সিদ্ধান্ত নেমে এলো
ঘুমের ভেতর অজান্তে
নিবৃত্তির উপর।
তার নাম ছিল— ঘর;
একখান সাধের ঘর।
তার রূপÑএক অবিরাম সম্পর্কের
প্রহরগণনা।
সে আমাকে আচ্ছন্ন করলো
আকাক্সক্ষার অতিরিক্ত রূপে,
একটি নারী,
যার হৃদয় নয়, ছিল কেবল চাহিদা ও
চেতনার সংঘাত,
যার প্রতিটি হাসি ছিল জিজ্ঞাসা,
প্রতিটি নীরবতা ছিল অভিযোগ।
আমার নিভৃত নদী
জমে গেলো শব্দদূষণের বরফে।
আমি আর আমি নইÑ
আমি এখন একজন পুরুষ,
যার পরিচয় মাত্র: উত্তরদায়ী,
উপার্জনশীল, অপরাধী।
আমি বিসর্জন করলাম নিজস্বতা,
উপাসনালয়ের মাটি দিয়ে গড়া
সংসারে।
যেখানে নিজের বলতে কেউ নেই,
আছে কেবল কর্তব্যের নিরবচ্ছিন্ন স্বর।
আজ আমি ‘ভালো’Ñ
এই শব্দটি আমার ঠোঁটের গহীনে
প্রতিদিন পঁচে যায়,
যেমন পঁচে যায় নদীর জল পাথরের মুখে।
নশ্বর ধরিত্রীর অট্টহাসি
পঁচা গাত্রে আগুন ধরায়,
পঁচন আর পুড়ে যাওয়া অতি সাধারণ।
তবু আমি হাসি,
কারণ আমার কান্না পুরুষোচিত নয়।
তবু আমি বাঁচি,
কারণ মৃত্যুও এই যন্ত্রণার তুলনায়/ অনুচিত।
আমি নিভৃতহারাÑ
সেই পুরুষ, যে আর নিজের ভেতর নেই।
মহাকালের যাত্রায়
নিরুদ্দেশ পানে...।