প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ২১:৫০
সাহিত্য একাডেমী, চাঁদপুর-এর নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন
সাহিত্যপ্রেমীদের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যরাও চর্চা করবে আশা করি
-----জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

সাহিত্য একাডেমী, চাঁদপুর-এর নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৩১ মে ২০২৫) চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণের মাধ্যমে এ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এতে ১৫ পদের বিপরীতে ২৩ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। সদস্যদের গোপন ভোটে ৩৯ বছরে এই প্রথম সাহিত্য একাডেমী, চাঁদপুর-এর কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়।
|আরো খবর
সাহিত্য একাডেমী প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পর এবারই প্রথম সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২৬ জন সদস্যের মধ্যে ৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সহ-সভাপতি পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জয়লাভ করেছেন একাডেমীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুল্লাহিল কাফী। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৭২, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহজাহান সিদ্দিকী পেয়েছেন ১৩ ভোট। পরিচালক (গ্রন্থাগার, সেমিনার ও শিশু সাহিত্য) পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জয়লাভ করেছেন সাহিত্য মঞ্চ, চাঁদপুর-এর সভাপতি আশিক বিন রহিম। তার প্রাপ্ত ভোট ৩৯, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ম. নূরে আলম পাটওয়ারী পেয়েছেন ৩৩ ভোট।
সদস্য পদে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে বিজয়ী হয়েছেন ১০ জন। বিজয়ীরা হলেন : নুরুন্নাহার মুন্নী (প্রাপ্ত ভোট ৭৮), মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া (প্রাপ্ত ভোট ৭৪), সুমন কুমার দত্ত (প্রাপ্ত ভোট ৭২), মির্জা জাকির (প্রাপ্ত ভোট ৬৯), কবির হোসেন মিজি (প্রাপ্ত ভোট ৬৬), মনিরুজ্জামান বাবলু (প্রাপ্ত ভোট ৫৫), উজ্জ্বল হোসাইন (প্রাপ্ত ভোট ৫৫), শেখ মহিউদ্দিন রাসেল (প্রাপ্ত ভোট ৫১), সাদ আল-আমিন (প্রাপ্ত ভোট ৫১) ও নূরুল ইসলাম ফরহাদ (প্রাপ্ত ভোট ৫০)। উল্লেখ্য, নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৪ মে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহের নির্ধারিত সময় ছিলো। পৃথক পৃথক পদে মোট ২৮ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ১৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তারা। এর মধ্যে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদ থেকে ২জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। শনিবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সাহিত্যপ্রেমীদের আনাগোনায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় সরগরম হয়ে উঠে। সদস্যদের মাঝে বইতে থাকে আনন্দের বন্যা। তৈরি হয় উৎসবের ভাব ও উন্মাদনা। প্রার্থীরা একে অপরের সাথে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন।
মহাপরিচালক পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কাদের পলাশ। পরিচালক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন পাঁচজন প্রার্থী। পরিচালক পদে ৫জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও দুটি পদে ২জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন : পরিচালক (গবেষণা) মুহাম্মদ ফরিদ হাসান এবং পরিচালক (সাহিত্য ও প্রকাশনা) মাইনুল ইসলাম মানিক। এ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত এবং চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের দুজন সহকারী কমিশনার মো. নাজমুল হুদা ও মো. আনিছুর রহমান।
নির্ধারিত সময় সকাল ১১টার কিছু পরে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল সাড়ে ৪টায়। এরপর ভোট গণনা শেষে বিকেল ৫টায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণার পূর্বে তিনি বলেন, চাঁদপুরের সাহিত্যিকরা এ নির্বাচনটি উপভোগ করেছে। তারা অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা চালিয়েছে।সাহিত্যপ্রেমীদের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যরাও চর্চা করবে আশা করি। এটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আশা করি নির্বাচিত কমিটি সাহিত্য চর্চা ও প্রসারের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এই প্রথম সাহিত্য একাডেমীর সদস্যরা গোপন ভোটে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হলেন। এটি অন্যান্য সামাজিক সংগঠন ও সংস্থা উদাহরণ হিসেবে নিতে পারে। এছাড়া সহ-সভাপতি পদে একজন, পরিচালক পদে একজন ও নির্বাহী সদস্য পদে একজন জেলা প্রশাসক কৃর্তক মনোনীত হবেন। তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই নির্বাচিত কমিটি কাজ শুরু করবে। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় সাহিত্য চর্চা ও উন্নয়নে তারা কাজ করবে। আমি নির্বাচিত সকলকে অভিনন্দন জানাই।