প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৯
সংস্কৃতিতে পল্লী কবি জসিম উদ্দিন

পল্লী কবি জসীমউদ্দীন বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে এক অসামান্য নাম। তিনি আবহমান বাংলার গ্রামীণ জীবনের সহজ-সরল রূপ, মানুষের অনুভূতি, প্রেম, বিরহ, লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তার কবিতায় জীবন্ত করে তুলেছেন। নিচে পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের সংস্কৃতিতে অবদানের কিছু মূল দিক তুলে ধরা হলো :
১. পল্লীজীবনের চিত্রাঙ্কন : পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ছিলেন গ্রামীণ জীবনের কবি। তাঁর কবিতায় গ্রামবাংলার প্রকৃতি, কৃষকের জীবন, নদী, হাট, গ্রামীণ অনুষ্ঠান, মেলা ইত্যাদির প্রাণবন্ত বর্ণনা পাওয়া যায়।
উদাহরণ : তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘নকশী কাঁথার মাঠ’।
২. লোকসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ : পল্লী কবি জসীমউদ্দীন বাঙালি লোকসংস্কৃতিকে সাহিত্যে তুলে ধরেছেন। লোককথা, লোকগীতি, পালাগান, লালন-ভাব ইত্যাদি উপাদান তিনি কবিতার মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছেন। তিনি নিজেও লোকগান সংগ্রহ ও সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন।
৩. ভাষার সরলতা ও আবেগ : পল্লী কবি জসীমউদ্দীন সাধারণ মানুষের ভাষায় কবিতা লিখেছেন। সাহিত্যের মূলধারায় গ্রামীণ উপভাষার ব্যবহার এনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেন।
৪. বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও সাংস্কৃতিক পরিচয় : পল্লী কবি জসীমউদ্দীন বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি, পরিচয় ও আত্মার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। তাঁর সাহিত্য বাংলাদেশের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
৫. সংগীত ও নাট্যজগতে অবদান : তিনি অনেক জনপ্রিয় গান ও নাটক রচনা করেছেন। তাঁর লেখা গান ‘আমার সোনার বাংলা’-এর আদলে অনুপ্রাণিত গানগুলোও জাতীয় আবেগের অংশ হয়ে উঠেছে।
পরিশেষে পল্লী কবি জসীমউদ্দীন শুধু একজন কবি নন, তিনি ছিলেন বাংলার মাটি ও মানুষের প্রতিনিধি। তাঁর সাহিত্যকর্ম গ্রামীণ সংস্কৃতিকে যেমন তুলে ধরেছে, তেমনি একে লিপিবদ্ধ করে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণও করেছেন।