বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪৭

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ‘জীবনে’র এন্ডোসমেন্ট

হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ‘জীবনে’র এন্ডোসমেন্ট

নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ী মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ‘জীবনে’র এন্ডোসমেন্ট গত শনিবার (৯ আগস্ট ২০২৫) দুপুর ২টায় নিউইয়র্ক ও-এর কুইন্সের সিরাজী বেনকুইট হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। খবর আইবিএননিউজ।

‘জীবন’ জ্যামাইকা ইন্টারগেটেড বাংলাদেশী অফির্সাস নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ডিটেকটিভ রাসেক মালিকের উপস্থাপনায় ও পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এন্ডোসমেন্টে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান ‘জীবন’ জ্যামাইকা ইন্টারগেটেড বাংলাদেশী অফিসার্স নেটওয়ার্কের সভাপতি ক্যাপ্টেন কারাম চৌধুরী।বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি পুলিশ অফিসার মো. হালিম এবং ‘জীবন’-এর ফাউন্ডাস নির্বাহী বোর্ডের সদস্যর পুলিশ অফিসার ও সাংবাদিক সর্দার আল মামুন।

জোহরান মামদানি তাঁর বক্তব্যে জীবনের সমর্থনের জন্েয তিনি সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ‘জীবনে’র এন্ডোসমেন্ট প্রশংসিত হয়েছে। এদিন ‘জীবন’-এর কর্মকর্তা ছাড়াও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মামদানিকে ‘জীবনে’র এন্ডোসমেন্ট শেষে দুপুরের ভোজে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।জোহরান মামদানিকে নিয়ে শুধু প্রথম প্রজন্মের ইমিগ্রান্ট এবং তাঁর ধর্মগত পরিচয়ের কারণে যতোটা এই আলোড়ন, তার চেয়ে অনেক বেশি তাঁর দরিদ্রকেন্দ্রিক এবং পুঁজিবাদবিরোধী নীতির কারণে। অনেক মেয়র প্রার্থী বা মেয়র নিউইয়র্ক সিটির দরিদ্র বা স্বল্প আয়ের মানুষদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তার দুটি উদাহরণ--বর্তমান মেয়র এরিক এডামস এবং এর পূর্ববর্তী মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। তাঁদের প্রধান কর্মসূচি হলো, নিউইয়র্ক সিটিকে দরিদ্র মানুষদের জন্যে অ্যাফোর্ডেবল করে তোলা। কিন্তু প্রাইমারিতে মনোনয়ন পেয়ে ঝড় তোলা প্রার্থী জোহরান মামদানি ধনীদের ওপর অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপের ঘোষণা দিয়ে বলতে গেলে কাঁপিয়ে দিয়েছেন নির্বাচনী মঞ্চ। তাঁর এই অর্থনীতি বিষয়ক নীতিমালা নিয়ে প্রাইমারির দুদিন পর থেকেই প্রতিবেদন ছাপছে অর্থনীতি বিষয়ক জার্নাল ফরচ্যুন, সিএনবিসি, ফক্স বিজনেস সহ নিউইয়র্ক টাইমস, নিউইয়র্ক পোস্ট ইত্যাদি। তাদের প্রতিবেদনগুলোতে জোহরান মামদানির অর্থনৈতিক নীতিমালাকে ভুল বলে উল্লেখ করে লিখেছে, বিশ্বের বাণিজ্য রাজধানী নিউইয়র্ক সিটি থেকে বিলিয়নায়াররা ফ্লোরিডাসহ অন্য স্টেটে মুভ করার চিন্তা করছে। এই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সিএনএন একটি প্রতিবেদন প্রচার করেছে, যেটি অনূদিত হয়েছে বাংলাদেশে। এখানে তা মুদ্রিত হলো :

নিউইয়র্কের আবাসন ব্যবসায়ী জে বাতরা। তার দুই ক্রেতা ম্যানহ্যাটনে বহু কোটি ডলারের বাড়ি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রার্থী হিসেবে জোহরান মামদানির মনোনয়নের কারণে বিষয়টি নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবছেন তারা। দেখছেন পরিস্থিতি কোন্ দিকে যায়।

গত ১৪ জুলাই সিএনএন ‘নিউইয়র্ক শহরের বিলাসবহুল আবাসন ব্যবসায় অস্থিরতা’র চিত্র তুলে ধরে বলেছেÑঅনেক ধনী ব্যবসায়ী নিউইয়র্কের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

জে বাতরা সিএনএনকে বলেন, ‘অনেক ধনী ব্যক্তি বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে এখন কিছুটা সতর্ক। জোহরানের জনপ্রিয়তা যতই বাড়ছে তাদের উদ্বেগও ততই বাড়ছে। বলছেÑ ‘কী হচ্ছে এসব?’

গত মাসে নিউইয়র্ক শহরের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি ঘোষণা দেন, তিনি নির্বাচিত হলে এক মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করা শহরের সব বাসিন্দাকে দু শতাংশ বাড়তি কর দিতে হবে। অন্যদিকে, কম আয়ের মানুষদের জন্যে থাকবে সরকারি আবাসন সুবিধা।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, নানা কারণে জোহরানের এসব প্রস্তাব-প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব নয়।

৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ায় জে বাতরার গ্রাহকরা শঙ্কিত। তাদের ভাষ্যÑ‘কেউই চায় না তাদের কর বেড়ে যাক।’

সিএনএন’র ভাষ্যÑধনীদের কেউ কেউ নিউইয়র্ক ছাড়ার চিন্তা করছেন। নিউইয়র্ক শহর বিশ্বের বিলাসবহুল আবাসন ব্যবসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এই শহরেই শ্রমজীবী মানুষদের থাকার জন্যে নিদারুণ কষ্ট করতে হয়। আর তাদের পাশেই আকাশচুম্বী বিলাসবহুল ভবনগুলোয় থাকেন ধনীরা।

কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্যদের আলোচনা বিশ্লেষণ করে সিএনএন বলছেÑজোহরানের প্রার্থিতার কারণে অনেকে নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। বিশেষ করে অভিজাত আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দারা।

বাজার বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান ‘রেডফিন’র তথ্য বিবেচনায় নিয়ে সিএনএন জানায়, গত ২৯ জুন থেকে ৫ জুলাই আগের সপ্তাহগুলোর তুলনায় ব্যবসা কিছুটা কমেছে। জোহরান মামদানি প্রাইমারিতে জিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র প্রার্থী নির্বাচিত হন।

জোহরানের আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন সময় এলো, যখন নিউইয়র্কের বাড়ি ভাড়া বেড়েই চলছে। রিয়েলটর ডট কমের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ভাড়া পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালের তুলনায় ভাড়া বেড়েছে ১৮ শতাংশ।

জে বাতরা বলেন, অনেক ছোট ব্যবসায়ী যারা ছোট অ্যাপার্টমেন্ট কিনে ভাড়া দেওয়ার চিন্তা করেন তারাও ‘জোহরান ভয়ে’ আছেন, যদি তিনি মেয়র হন, তাহলে বাড়ি ভাড়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবেন।

গত ১১ জুলাই সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানায়, জোহরানের দলীয় মনোনয়নের পর ফ্লোরিডা নিয়ে ধনী নিউইয়র্কবাসীদের খোঁজ-খবর ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ফ্লোরিডার আবাসন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ‘উগ্র-বামপন্থি’ জোহরান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর নিউইয়র্ক থেকে তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

ফ্লোরিডার বিলাসবহুল আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়ান সদেবিস ইন্টারন্যাশনাল রিয়েলটির প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ডে লা ভেগা সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, তার সব গ্রাহক নিউইয়র্ক শহরের কর সুবিধা, সামগ্রিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও সার্বিক জীবনমান নিয়ে চিন্তিত।

‘ট্যাক্সোডাস’

২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি বাসিন্দা নিউইয়র্ক ছেড়ে ফ্লোরিডায় পাড়ি জমিয়েছেন, সঙ্গে নিয়ে গেছেন প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আগামী নভেম্বরে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির সম্ভাব্য জয়। ড্যানিয়েল ডে লা ভেগা মনে করছেন, জোহরান নির্বাচিত হলে ‘শহর ছাড়ার দ্বিতীয় ঢেউ’ শুরু হতে পারে।

গত ১৭ জুলাই সিএনবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোহরান মামদানির ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থিতার বিজয় এবং অতি ধনীদের ওপর বাড়তি কর চাপানোর ঘোষণা নিউইয়র্ক শহর থেকে ধনীদের অন্য কোথাও চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। এর প্রভাবে নিউইয়র্কের সবচেয়ে দামি আবাসন ব্যবসায় মন্দার লক্ষণও ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।

অনেক বাজার বিশ্লেষকের আশঙ্কা, জোহরানের কঠোর করনীতির ভয়ে নিউইয়র্ক থেকে ‘ব্যাপক হারে’ উচ্চ করদাতা ব্যক্তিরা অন্যত্র চলে যেতে পারেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যালিফোর্নিয়া সেন্টার ফর জবস অ্যান্ড দ্য ইকোনমি এই পরিস্থিতি বোঝাতে ‘ট্যাক্সোডাস’ পরিভাষাটি ব্যবহার করেছে।

ফিসক্যাল পলিসি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক নাথান গাসডর্ফ মনে করেন, নিউইয়র্ক থেকে সম্পদ সরে যাওয়ার খবর আংশিকভাবে গণমাধ্যমগুলো প্রকাশিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিলিয়নিয়ারদের একটি দল নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডায় চলে যাচ্ছেন। কিন্তু, মনে রাখা দরকার নিউইয়র্ক থেকে যে সংখ্যক ধনী ব্যক্তি অন্য শহরে চলে যান, এর তুলনায় বেশি সংখ্যক ধনী মানুষ নিউইয়র্ক তৈরি করে।

তিনি সিএনবিসিকে বলেন, ‘নিউইয়র্কে মিলিয়নিয়ারদের প্রকৃত সংখ্যা জানা নেই। তবে এই শহর নতুন নতুন মিলিয়নিয়ার তৈরি করে।’

গত ২ জুলাই ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ শিরোনাম করেÑ ‘জোহরান মামদানির মেয়র পদে সম্ভাব্য বিজয় আবাসন শিল্পে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।’ এই আতঙ্ক এতোটাই তীব্র যে, আবাসন ব্যবসায়ী ও আরএক্সআর রিয়েলিটির প্রধান নির্বাহী স্কট রেশলার গণমাধ্যমকে সরাসরি বলেন, ‘নিউইয়র্ক হচ্ছে পুঁজিবাদের রাজধানী। আমাদের মতো মানুষের শহরে সমাজতান্ত্রিক মেয়র ঠিক মানায় না। আমাদের ডিএনএর সঙ্গে তা যায় না।’

রেশলার মনে করেন, ভোটারদের বোঝানো উচিত যে, জোহরান যতই ‘জনবান্ধব’ কথা বলুক না কেন, নিউইয়র্কের গভর্নরের অনুমোদন ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারবেন না। তার মতে, জোহরান যেন গভর্নরের সমর্থন না পান, সেজন্যে কাজ করা দরকার।

আরেক আবাসন ব্যবসায়ী লিওনার্ড স্টেইনবার্গ ‘নিউইয়র্ক টাইমস’কে বলেছেন, ‘বিলিয়নিয়াররা আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেন। আমি মনে করি, যে মেয়র আমাদের বাদ দিয়ে কাজ করার চিন্তা করবেন তিনি আমাদের মেয়র নন। আশা করবো, সব মেয়রপ্রার্থী এই বিষয়ে একমত হয়ে কাজ করবেন।’

তবে, বিলাসবহুল আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা স্টিভেন কোহেন কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মনে হয় না জোহরান মামদানি বিজয়ী হলে সবাই গণহারে ঘরবাড়ি বিক্রি করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবেন। তবে এ কথা ঠিক যে, মানুষ তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন।’ তিনি আরও মনে করেন, জোহরান মামদানি যেসব ‘জনকল্যাণমূলক’ কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলো বাস্তবসম্মত নয় বা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তার ভাষ্য, ‘নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো শুনতে ভালো লাগে। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে অর্থের প্রয়োজন। আমরা এক ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করি।’

জোহরান কতটা ‘কমিউনিস্ট’

গত ৩০ জুন বিবিসির এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয় জোহরান মামদানির বক্তব্য দিয়ে। এর আগের দিন এই মেয়রপ্রার্থী সংবাদমাধ্যম এনবিসির সংবাদ সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ‘আপনি কি মনে করেন, কারো বিলিয়নিয়ার হওয়ার অধিকার আছে?’

জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি না সমাজে বিলিয়নিয়ার শ্রেণি থাকা উচিত। কারণ, এই অসাম্যের দুনিয়ায় এটা অনেক বেশি পরিমাণের অর্থ।’ তিনি মনে করেন, করের বোঝা ধনীদের বহন করা উচিত। এই মন্তব্যের পর থেকেই জোহরান মামদানিকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ‘শতভাগ কমিউনিস্ট পাগল’ আখ্যা দেন। ‘দ্য ডেইলি ওয়ার’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা তার পডকাস্টে বলেন, ‘দিনের সবচেয়ে বড় খবর : সম্ভবত এক কমিউনিস্ট হতে যাচ্ছেন নিউইয়র্কের পরবর্তী মেয়র।’ রিপাবলিকান নেতা এলিস স্টিফানিক সমাজমাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘জোহরান মামদানি কমিউনিস্ট’।

শুধু রিপাবলিকান পার্টির নেতাকর্মীই নন, নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক শীর্ষ নেতাও জোহরানের সমালোচনায় মুখর। নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এবং বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জোহরানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং নিউইয়র্কবাসীর প্রতি জোহরানকে ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছেÑ‘জোহরান কি কমিউনিস্ট’ বা ‘জোহরান কতটা কমিউনিস্ট?’ গত ২৯ জুন এনবিসি’র এক আলোচনায় জোহরানকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়Ñ‘আপনি কি কমিউনিস্ট?’ জবাবে তিনি সরাসরি বলেন, ‘না, আমি কমিউনিস্ট নই।’

জোহরানের প্রচারকর্মীরা বলছেন, তারা চান গণপরিবহন, বাড়িভাড়া ও গ্রোসারির খরচ কমানো হোক, যাতে কম আয়ের মানুষেরা নিউইয়র্ক শহরে স্বচ্ছন্দে চলতে পারেন। তারা পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি খরচে গ্রোসারি দোকান চালু, কম খরচে বাড়িভাড়া এবং বিনা পয়সায় যাতায়াত ব্যবস্থার কথা বলছেন।

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক আনা জিমালা বুসের বরাত দিয়ে আল জাজিরা গত ২৭ জুন জানায়, ‘জোহরান মামদানি কমিউনিস্ট নন। কমিউনিজমে কেন্দ্রীয়ভাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থাকে। পণ্যের দামÑমানের নিয়ন্ত্রণ থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নেই। সেখানে একদলীয় শাসন থাকে। জোহরান এমন কোনো কিছুর ডাক দেননি।’

সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের ম্যানহাটন কমিউনিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জিওফ্রে কার্টজও মনে করেন, ‘জোহরানকে কমিউনিস্ট বলা হাস্যকর অপবাদ।’

অথচ, জোহরান মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে অনেক ব্যবসায়ী আরও নিরাপদ জায়গায় পুঁজি বিনিয়োগের চিন্তা করছেন। কেউ কেউ নিউইয়র্কে বিনিয়োগ করবেন কিনা তা নিয়েও ভাবছেন। তাই প্রশ্ন জোহরান মামদানির ‘ভয়ে’ কি নিউইয়র্ক ছাড়ছেন ধনীরা।অনুষ্ঠানের শুরুতে ঈমাম ছামশি আলীর প্রার্থনা করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়