সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৮

বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষার্জনে কোথায় কীভাবে পড়াশোনা করা যায়?

তথ্য-প্রযুক্তিকণ্ঠ ডেস্ক
বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষার্জনে কোথায় কীভাবে পড়াশোনা করা যায়?

বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষা অর্জনের জন্যে আপনি চাইলে দুটি প্রধান পথ অনুসরণ করতে পারেন : প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং অনলাইন/স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ। নিচে দুটো পথই বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছি :

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা (ডিপ্লোমা ও ডিগ্রি)

বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি বহু পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল কলেজ রয়েছে, যেখানে আপনি সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, কম্পিউটার, টেলিকমিউনিকেশনসহ নানা বিষয়ে ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি কোর্স করতে পারেন।

কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান :

-চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট -নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম

-ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট -তেজগঁাও, ঢাকা

-টওঝঞ ওহংঃরঃঁঃব ড়ভ ঝপরবহপব ধহফ ঞবপযহড়ষড়মু -আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের জন্য খ্যাত

-বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-রাঙামাটি

-রাজশাহী, পাবনা, কক্সবাজার, ফেনী, সিলেটসহ প্রায় প্রতিটি বিভাগে সরকারি পলিটেকনিক রয়েছে

ভর্তির যোগ্যতা : সাধারণত এসএসসি বা সমমান পাস।

কোর্সের মেয়াদ : ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং।

অনলাইন ও স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ

যারা চাকরি বা অন্যান্য ব্যস্ততার মাঝে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্যে অনলাইন কোর্স ও প্রশিক্ষণ একটি চমৎকার পথ।

জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম :

-১০ গরহঁঃব ঝপযড়ড়ষ -একাডেমিক ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স

-ঝযরশযড় -অ্যানিমেটেড ভিডিও ও লাইভ ক্লাস

-ঝযরশযনব ঝযড়নধর -ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ফ্রিল্যান্সিং

-ইড়যঁনৎরযর, এযড়ড়ৎর খবধৎহরহম, ঞযৎরারহম ঝশরষষং-প্রফেশনাল ও আইটি কোর্সসমূহ

বিষয়সমূহ : প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অও, ডেটা সায়েন্স, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি।

সরকারি প্রশিক্ষণ ও স্কলারশিপ

বাংলাদেশ সরকার ওঈঞ উরারংরড়হ ও ঝযরশশযড়শ ইধঃধুড়হ-এর মাধ্যমে ওঈঞ ইঞঞ (ইধংরপ ঞবপযহরপধষ ঞৎধরহরহম) প্রোগ্রাম চালু করেছে, যেখানে তরুণরা বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ নিতে পারে।

প্রযুক্তিগত শিক্ষা শেষে চাকরির সুযোগগুলো কেমন?

বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষা শেষ করার পর চাকরির সুযোগগুলো দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে—বিশেষ করে আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমেশন ও ডিজিটাল সেবাখাতে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরছি :

সম্ভাবনাময় চাকরির ক্ষেত্র

-সফটওয়্যার ডেভেলপার ও ফুল-স্ট্যাক ইঞ্জিনিয়ার : ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে

-সাইবার সিকিউরিটি ও নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ : ব্যাংক, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট সেক্টরে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের চাহিদা বাড়ছে

-ডেটা অ্যানালিস্ট ও ডেটা সায়েন্টিস্ট : ব্যাংকিং, মার্কেটিং ও গবেষণায় বিশ্লেষণমূলক দক্ষতার চাহিদা দ্রুত বাড়ছে

-ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনার : সফটওয়্যার ও ডিজিটাল পণ্যের ব্যবহারবান্ধব ডিজাইনের জন্যে

-ক্লাউড কম্পিউটিং ও উবাঙঢ়ং ইঞ্জিনিয়ার : অডঝ, অুঁৎব, এড়ড়মষব ঈষড়ঁফ–এ দক্ষতা থাকলে আন্তর্জাতিক চাকরির সুযোগও তৈরি হয়

-রোবটিকস ও অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ার : উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহন খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি

দেশ ও বিদেশে কর্মসংস্থান

-দেশীয় বাজারে : ই-কমার্স, টেলিকম, ব্যাংক, স্টার্টআপ ও সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে নিয়োগ বাড়ছে

-আন্তর্জাতিক বাজারে : ফ্রিল্যান্সিং, রিমোট জব, ওয়ার্ক ভিসা ও স্কিল মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় সুযোগ তৈরি হচ্ছে

কোন্ দক্ষতাগুলো বেশি চাহিদাসম্পন্ন?

-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (অও) ও মেশিন লার্নিং

-বিগ ডেটা ও ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন

-ক্লাউড আর্কিটেকচার

-সাইবার নিরাপত্তা ও ইথিক্যাল হ্যাকিং

-সফট স্কিল : সমস্যা সমাধান, বিশ্লেষণাত্মক চিন্তা, দলগত নেতৃত্ব

ইন্টার্নশিপ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা

অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন ইওউওঈঙখওঘএ ওঞ খঃফ. ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির সুযোগ দিচ্ছে। বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকলে নিয়োগের সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়ে।

২০২৫ সালে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠেছে যেসব দক্ষতা, সেগুলো শুধু চাকরির বাজারেই নয়, ভবিষ্যতের উদ্ভাবন ও নেতৃত্বেও বড়ো ভূমিকা রাখছে। নিচে সেগুলোর একটি বিবরণ দেওয়া হলো :

শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন প্রযুক্তিগত দক্ষতা

এক. ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপমেন্ট--

ফ্রন্ট-এন্ড ও ব্যাক-এন্ড উভয় দিকেই দক্ষতা থাকলে ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে বিশাল সুযোগ তৈরি হয়।

দুই. ক্লাউড কম্পিউটিং (অডঝ, অুঁৎব, এড়ড়মষব ঈষড়ঁফ)--ব্যবসা ও প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তরে ক্লাউড আর্কিটেক্ট ও ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।

তিন. ডেটা অ্যানালাইসিস ও বিগ ডেটা--

ঝছখ, চুঃযড়হ ও ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন টুলে দক্ষতা থাকলে ব্যাংকিং, মার্কেটিং ও গবেষণায় বিশাল সুযোগ।

চার. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (অও) ও মেশিন লার্নিং (গখ)--

অটোমেশন, হেলথটেক, ফিনটেকসহ প্রায় সব খাতেই অও/গখ দক্ষতা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

পঁাচ. সাইবার নিরাপত্তা ও ইথিক্যাল হ্যাকিং--

ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, পেন-টেস্টিং ও রিস্ক অ্যাসেসমেন্টে দক্ষতা চাহিদার শীর্ষে।

ছয়. টও/টঢ ডিজাইন--

সফটওয়্যার ও অ্যাপের ব্যবহারবান্ধব ডিজাইন তৈরিতে এই দক্ষতা ফ্রিল্যান্সিং ও চাকরির উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ।

সাত. উবাঙঢ়ং ও অটোমেশন টুলস (উড়পশবৎ, ঔবহশরহং, কঁনবৎহবঃবং)--

সফটওয়্যার ডেলিভারি ও উৎপাদন ব্যবস্থায় দক্ষতা থাকলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও ঝধধঝ কোম্পানিতে চাহিদা বাড়ছে।

আট. ইন্টারনেট অব থিংস (ওড়ঞ)--স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরি ও হেলথ ডিভাইসের জন্য সেন্সর ও সংযুক্ত ডিভাইস ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা প্রয়োজন।

নয়. রোবটিকস ও অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং--

উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহনে রোবটিকস দক্ষতা ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানে বড়ো ভূমিকা রাখবে।

দশ. ডিজিটাল মার্কেটিং ও ঝঊঙ--ব্যবসা ও কনটেন্ট প্রচারে ঝঊঙ, এড়ড়মষব অফং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের দক্ষতা এখন অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়