মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ০২:৩১

চাঁদপুর শহরে বাড়ছে মশার উপদ্রব।। ডেঙ্গুর আশঙ্কা

নিয়মিত ওষুধ ছিটানো না হওয়ায় ভোগান্তি চরমে, পৌরসভার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে

কবির হোসেন মিজি
চাঁদপুর শহরে বাড়ছে মশার উপদ্রব।। ডেঙ্গুর আশঙ্কা

চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সঠিকভাবে মশা নিধনের জন্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ ছিটানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে শহরবাসীর। শহরের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই সন্ধ্যা নামার পর থেকেই মশার অত্যাচার সহ্যসীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে করে বাড়ছে মশাবাহিত রোগ, বিশেষ করে ডেঙ্গু জ্বরের আশঙ্কা

গত ক’দিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার পক্ষ থেকে মশা নিধনের ঔষধ ছিটানো হয়নি। মশার যন্ত্রণায় বাসা-বাড়ি কিংবা দোকানপাটে কোথাও ঠিকমতো বসা যায় না। ছেলে-মেয়েরা পড়তে বসলেও মশার কারণে তারা ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছে না।

গত ২/৩ মাস ধরে মশার যন্ত্রণায় অনেকেই পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে হতাশ। তারা বলেন, মশা নিধনের কোনো প্রকার ঔষধ পৌরসভা থেকে দেয়া হয়নি কিংবা ওষুধ ছিটানোর দৃশ্য চোখে পড়েনি।

চাঁদপুর পৌরসভার আওতাধীন মোট ১৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে মিশন রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক, মাদরাসা রোড, চেয়ারম্যানঘাটা, নাজিরপাড়া, পালপাড়া, প্রফেসর পাড়া, নতুন বাজার, উকিল পাড়া, আদালত পাড়া, গাঙ্গুলী পাড়াসহ অনেক এলাকাতেই গত ৫/৬ মাস ধরে মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, একসময় পৌরসভার পক্ষ থেকে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হতো। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সন্ধ্যার পরপরই দোকানপাট, বাসাবাড়ি এমনকি রাস্তাঘাটেও মশার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। ছোট বাচ্চা, বৃদ্ধ এবং রোগীরা মশার কামড়ে রীতিমতো নাজেহাল

বটতলা এলাকার সাখায়াত হোসেন, সালাউদ্দিন খান, চুন্নু খান, মিশন রোডের কাদির খান, নয়ন খান, মামুন মিজি, নাজিরপাড়ার কাউসার দেওয়ান, মিন্টু দেওয়ান, নতুন বাজারের মো. সোহেলসহ অনেকে বলেন, আগে অন্তত দুই-এক মাস পরপর ওষুধ ছিটানো হতো। এখন কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও ওষুধ ছিটানোর গাড়ি চোখে পড়ে না। মশার কারণে বসে থাকা, খাওয়া, ঘুম—সবই দুঃসহ হয়ে উঠেছে

এদিকে মশার উপদ্রবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে মানুষজন জ্বরে ভুগছেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি হচ্ছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে, আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা নিধন কার্যক্রমে অবহেলা, ড্রেনেজ দুর্বলতা, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি ডেঙ্গু প্রজননের ক্ষেত্র তৈরি করে। তাই বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই মশা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ যাতে না হয়, সেজন্যে আমরা ইতোমধ্যে কিছু ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটানো শুরু করেছি। তবে বৃষ্টির কারণে মাঝে মাঝে ওষুধ ছিটানো বন্ধ রাখতে হয়। বৃষ্টির দিনে ঔষধ ছিটানো কার্যকর নয়, বরং অপচয় হয়

তিনি আরও বলেন, আমরা শীঘ্রই শহরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করবো। স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং ওষুধ ছিটানোর কাজ নিয়মিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়