প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৫৩
বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন : পরিবেশ রক্ষার প্রধান হাতিয়ার

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও বনায়নের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গাছের ভূমিকা অপরিসীম।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে গাছ হলো প্রাকৃতিক ফুসফুস। গাছ বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং আমাদের জীবনের জন্যে অপরিহার্য অক্সিজেন সরবরাহ করে। একই সঙ্গে ধূলিকণা ও বিষাক্ত গ্যাস শোষণ করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখে।
নির্বিচারে বন উজাড়ের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে একদিকে তাপমাত্রা বাড়ছে, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বনভূমি থাকলে ঝড়ের গতি কমে যায়, বন্যার পানি আটকে রাখা যায় এবং নদীভাঙ্গনও হ্রাস পায়। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়।
বনভূমি কেবল মানুষের জন্যে নয়, অসংখ্য প্রাণী, পাখি ও কীটপতঙ্গের জন্যও আশ্রয়স্থল। বন ধ্বংস হলে জীববৈচিত্র্য বিলীন হয়ে যায়। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বনায়ন অত্যন্ত জরুরি।
বৃক্ষ কেবল পরিবেশ নয়, অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ফলদ ও ঔষধি গাছ মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসার চাহিদা পূরণ করে। কাঠ, বাঁশ ও বেত ঘরবাড়ি নির্মাণ, আসবাবপত্র ও কুটির শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।সরকারের উদ্যোগ ও জনগণের ভূমিকা
সরকার প্রতিবছর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান পালন করে থাকে। পাশাপাশি পরিবেশবাদীরা বিভিন্ন সময়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি হাতে নেন। তবে শুধু সরকারি উদ্যোগে নয়, জনগণের ব্যক্তিগত ও সামাজিক উদ্যোগেও গাছ লাগানো জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিটি নাগরিক যদি বছরে অন্তত একটি গাছ লাগিয়ে তা পরিচর্যা করে, তবে অচিরেই বনভূমির ঘাটতি পূরণ হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “একটি গাছে একশত উপকার।” তাই পরিবেশ রক্ষা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ ও বনায়নের বিকল্প নেই।