শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:১৭

ইজারাদার এতোটা ক্ষমতাধর হয় কীভাবে?

অনলাইন ডেস্ক
ইজারাদার এতোটা ক্ষমতাধর হয় কীভাবে?

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর উচ্চ বিদ্যালয়, গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাজীপুর মাদ্রাসা মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অপচেষ্টা ঠেকাতে আদালতে অভিযোগ দায়েরের পর আদালত ১৪৫ ধারা জারি করেছে। রোববার (১ জুন ২০২৫) চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ জারি করেন। জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাটের আহ্বান জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ বছর সরকার কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই মোতাবেক উপজেলা প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ বাদ দিয়ে কোরবানির পশুর হাট বসাতে ইজারা আহ্বান করে। সে অনুযায়ী গাজীপুর বাজারের কোরবানির পশুর হাট ইজারা পান জনৈক বিল্লাল ঢালী। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজারা পেয়ে ইজারাদার তার লোকজন নিয়ে গাজীপুর স্কুল ও মাদ্রাসা মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসাতে শুরু করেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক প্রতিনিধি মমিনুল ইসলাম ও মিলন তপাদার প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঠে কোরবানির পশুর হাট না বসাতে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু ইজারাদার এতে কর্ণপাত না করে মাঠেই কোরবানির পশুর হাট বসানোর আয়োজন শুরু করায় গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে রোববার (১ জুন ২০২৫) চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শান্তি শৃঙ্খলা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ রক্ষায় ১৪৫ ধারা জারির আবদেন করেন। আবেদন গ্রহণ করে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে ১৪৫ ধারা বিষয়ে মতামত প্রদান এবং ওসি ফরিদগঞ্জকে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থাগ্রহণের নিদের্শনা প্রদান করেন। এ ব্যাপারে মমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ রক্ষায় প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। কোনোভাবেই শিশুদের জন্যে এই মাঠ নষ্ট হতে দিতে পারি না। তাই আদালতে ১৪৫ ধারা জারির আবেদন করেছি।

প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বর্তমানে সরকারের পক্ষে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করছেন। বর্তমানে জাতীয় সংসদ সদস্য না থাকায় ইউএনও’র ওপর কোনো ধরনের প্রভাব বা চাপ সৃষ্টির এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। তারপরও বিল্লাল ঢালী নামের একজন পশুর হাটের অস্থায়ী ইজারাদার ফরিদগঞ্জের ইউএনও’র নির্দেশ অবজ্ঞা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসায়। এ ব্যাপারে একজন অভিভাবক সংক্ষুব্ধ হয়ে লিখিতভাবে ইউএনওকে জোর আপত্তি জানান। তারপরও ইজারাদার নিবৃত্ত হননি। যে কারণে ওই সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের শরণাপন্ন হন এবং সেই আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

ইজারাদার ক্ষমতা প্রদর্শন করায় একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালত পর্যন্ত যাওয়াটা হয়রানি হবার শামিল। ইউএনও মহোদয় তাৎক্ষণিক আইনগত ক্ষমতা প্রদর্শন না করায় ইজারাদার বিল্লাল ঢালী প্রশ্রয় অনুভব করেছে এবং বাড়াবাড়ি করেছে। এভাবে হাট-বাজারসহ যে কোনো ক্ষেত্রের ইজারাদার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো না কারো প্রশ্রয়ে/অর্থপূর্ণ নীরবতা/ নিষ্ক্রিয়তায় বাড়াবাড়ির দিকে এগোয় এবং অনেক ক্ষমতা প্রদর্শন করে। এটা কক্ষণো কোনো যুক্তিতে সমীচীন হতে পারে না। তারপরও এমন ইজারাদার প্রায়শই গুরুদণ্ড দূরে থাক, লঘুদণ্ড থেকেও রেহাই পায়। কারণ, ‘ডাল মে কুচ কালা হে’।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়