প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫, ২২:১৬
মতলব উত্তরে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট
দর্শনার্থীর ভিড় কালো পাহাড়ের দিকে

আর চারদিন পর ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদ। এবারের ঈদকে সামনে রেখে মতলব উত্তর উপজেলায় জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁক-ডাকে মুখরিত হাট প্রাঙ্গণ। তবে দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে কালো পাহাড়ের দিকে।
|আরো খবর
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ছোট-বড় মিলে ২৬২ জন খামারী রয়েছে। এছাড়া গৃহস্থরা নিজ বাড়িতেও গরু-ছাগল পালন করছেন। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় ২ হাজার ৭০টি, বলদ ৯১০টি, গাভী ৬৯৪টি, মহিষ ৬টি, ছাগল ৯৩০টি ও ভেড়া ১১৭টি এবং অন্যান্য ৭৫টিসহ মোটি ৪ হাজার ৮০২টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এ উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৫ হাজার ২০০টি। প্রস্তুত রয়েছে ৪ হাজার ৮০২টি। চাহিদা মেটাতে উপজেলায় ৩৯৮টি পশু ঘাটতি রয়েছে ।
উপজেলায় এবার ছেংগারচর বাজার ও আমতলা বাজার স্থায়ী হাটের পাশাপাশি বসবে সুজাতপুর, লবাইরকান্দি দাসের বাজার, মোহনপুর বাজার, সাহেব বাজার, ষাটনল লঞ্চঘাট, কালিপুর বাজার, নবুরকান্দি বাজার, নাউড়ী বাজার, গাজীপুর চেয়ারম্যান বাজার, গজরা বাজার, বেলতলি বাজার, এখলাশপুর বাজার, জনতা বাজার, গৌরাঙ্গ বাজার, উদ্যমদী হাইটেক সংলগ্ন বালু মাঠ, ইসলামিয়া বাজার, ভেদুরিয়া বাজার ও বাগানবাড়ি বাজারে রয়েছে অস্থায়ী পশুর হাট।
নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ‘এম এইচ বি এম এগ্রো’র কর্ণধার মেহেদী হাসান বাবু মিয়াজী বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরে গো-খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অনেকটাই। এর উপর যদি ভারত থেকে আসা গরু কোরবানির হাট-বাজারে অবাধে বিক্রি হয় তবে লোকসানের আশঙ্কা করছেন গো-খামারিরা।
সোমবার (২ জুন ২০২৫) ছেংগারচর হাটে গরু কিনতে আসা বোরহান জানান, বড়ো গরুর চেয়ে মাঝারি গরুর দাম বেশি। হাটে এসেছি গরু কিনতে। কিন্তু এখনও পছন্দমত গরু পাইনি। আজকে না পেলে অন্যান্য হাটে যাবো। হাটে আসা ক্রেতা সোহাগ বলেন, গরু কিনেছি। কিন্তু গত বছরের চেয়ে দাম অনেকটাই বেশি।
চান্দাকান্দি গ্রামের কবির এগ্রো ফার্মের ম্যানেজিং পার্টনার সুজন সরকার জানান, আমার খামারে ১০টি ষাঁড় পালন করেছি । গো-খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় খরচ অনেক বেশি পড়েছে । আমার খামারের সবচেয়ে বড় ষাঁড় কালো পাহাড়। কালো পাহাড়ের ওজন হবে ১২/১৩ মন। দাম চাচ্ছি সাড়ে ৪ লাখ টাকা। কালো পাহাড় দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছে। কেউ কেউ ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাম বলছে। আমার আশা ৪ লাখ টাকার ওপরে বিক্রি করা।এর কম হলে লোকসানের আশংকা করছি ।
গরুর পাইকার মফিজ জানান, বৃষ্টির কারণে বেচাকেনা কম হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বড়ো বাজারে বেচা কম হবে। গরুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
ছেংগারচর বাজার বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুল মান্নান লস্কর জানান, গরু হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতার যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, উপজেলায় ২০টি কোরবানির পশুর হাট বসছে। হাটগুলোতে গরুর সুস্থতা যাচাইয়ের জন্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। চাহিদার আলোকে কোনো ধরনের পশুই সংকট হবে না। কারণ কোরবানির হাটে অন্য জেলা ও উপজেলার পশু আসলে চাহিদা মিটে যায়।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল হক বলেন, আশা করি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।আমাদের একাধিক টিম থাকছে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। আমরা বাজারগুলো মনিটরিং করছি।